মিসরে নতুন করে বিক্ষোভ-ধর্মঘট চ্যালেঞ্জের মুখে সেনাশাসক
রয়টার্স/বিবিসি
মিসরে সেনাবাহিনীর আল্টিমেটামের মধ্যে বেতন বাড়ানোর দাবিতে নতুন করে বিক্ষোভ-ধর্মঘট শুরু করেছে জনতা। ব্যাপক গণআন্দোলনে প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের পদত্যাগের পর এবার দেশের নতুন সেনাশাসকদের কাছে ভালো বেতন এবং কাজের পরিবেশ দাবি করে একযোগে বিক্ষোভে নেমেছে ব্যাংক, পরিবহন ও পর্যটন কর্মীরা।
সেনাবাহিনী এরই মধ্যে মিসরীয়দের কাজে যোগ দেয়ার নির্দেশ দিলেও জনগণ তা উপেক্ষা করেছে।
সেনাবাহিনী সোমবার জনগণকে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফিরিয়ে আনায় সহায়তা না করলে গ্রেফতার হওয়ার আল্টিমেটাম দেয়।
এর আগে সেনাবাহিনী কায়রো তাহরির স্কয়ার থেকে লোকজনকে সরিয়ে দিলেও কিছুক্ষণ পরই আবার শত শত মানুষ সেখানে ভিড় জমায়। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় পুলিশও। এতে শক্ত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে সেনাশাসকরা।
কায়রো ও অন্যান্য শহরে বিক্ষোভকারীরা কম বেতন এবং কাজের খারাপ পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়। মিসরজুড়ে রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সামনে অবস্থান ধর্মঘটও করে তারা। অ্যালেকজান্দ্রিয়া ব্যাংকের শাখা অফিসের বাইরে বিক্ষোভ করেছে শত শত বিক্ষোভকারী। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ভবনের বাইরে বিক্ষোভ করেছে অন্তত ৫শ’ মানুষ। এক বিক্ষোভকারী সাফাত মোহাম্মদের উক্তি, ‘মোবারকের চুরি করা কোটি কোটি ডলার মিসরীয়দের মধ্যে ভাগ করে দিলেই চলবে।’ বিক্ষোভকারীদের নেতারা জানান, আমূল সংস্কার না হলে মিসরবাসী তাদের দাবি নিয়ে আবার বিক্ষোভ করবে। বিক্ষোভকারীরা আগামী শুক্রবার বিশাল এক বিজয় মিছিল করে বিপ্লব উদযাপনের পরিকল্পনা করছে। এর মধ্য দিয়ে সেনাবাহিনীকে জনগণের ক্ষমতা স্মরণ করে দিয়ে সতর্ক বার্তা দিতে চায় তারা।
এদিকে মিসরে বেসামরিক প্রশাসনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়ে বিক্ষোভকারীদের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটির সামরিক বাহিনী। তারা বলছে, আগামী ছয় মাস অথবা দেশে নতুন নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত ক্ষমতা তাদের হাতে থাকবে। একইসঙ্গে আন্দোলনের সময় আটক বন্দিদের মুক্তির দাবি জানানো হয়েছে। কায়রোর তাহরির চত্বরে যেসব মানুষ এখনও অবস্থান করছে তাদের দ্রুত ঘরে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মিসরের সামরিক বাহিনীর সর্বোচ্চ পরিষদের দেয়া সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে এখনও তাহরির চত্বরে বহু মানুষ অবস্থান করছে। তারা বলছে, খুব শিগগরিই সেনাবাহিনীর কাছ থেকে ক্ষমতা বেসমারিক প্রশাসনের হাতে ন্যস্ত করতে হবে। সামরিক বাহিনীর সর্বোচ্চ পরিষদের সভায় দেশের সংসদ ভেঙে দেয়া এবং সংবিধান স্থগিত করা হয়েছে।