Wednesday, February 23, 2011

নিউজিল্যান্ডে ভূমিকম্প, নিহত ৬৫


নিউজিল্যান্ডের সাউথ আইল্যান্ডে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী ক্রাইস্টচার্চে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে। নিহত হয়েছে কমপক্ষে ৬৫ জন নারী-পুরুষ-শিশু। সোমবার স্থানীয় সময় বেলা ১২-৫১ মিনিটে প্রবল কম্পনে কয়েক মুহূর্তে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় নগরীর বিশাল এলাকা। 'ক্রাইস্টচার্চ নগরীর মাত্র দশ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে ভূ-গর্ভের পাঁচ কিলোমিটার নিচে এই ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়। প্রধানমন্ত্রী জন কি এই দুর্যোগে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের কথা জানিয়ে সারাদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। দমকল বাহিনী জানিয়েছে, দালানকোঠা ও উঁচু ভবনের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে বহু নর-নারী ও শিশু আটকা পড়ে রয়েছে। সরকারি ঘোষণায় গত সেপ্টেম্বর-পরবতর্ী ৭ দশমিক ১ মাত্রার প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্পের চাইতেও সোমবারের ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা ব্যাপক ও মারাত্মক বলে জানানো হয়েছে। ঐ সময় প্রবল কম্পনে কেউ নিহত হয়নি। যদিও সম্পদের ক্ষতি হয়েছিল তিনশ' কোটি ডলারের। তখন ক্রাইস্টচার্চ নগরী থেকে উৎপত্তিস্থল ছিল আরো দূরে এবং ভূ-গর্ভের আরো নিচে।

মাত্র পাঁচ মাসের ব্যবধানে শহরটিতে দ্বিতীয় দফা ভূমিকম্পের পর টেলিভিশন সম্প্রচারে দেখা যায়, বিধ্বস্ত বিল্ডিংয়ের ভেতর থেকে মানুষজনকে বের করে আনা হচ্ছে। পুলিশ ভূমিকম্পে অনেক হতাহতের আশঙ্কা করছে। ভূমিকম্পের পরপরই বন্ধ করে দেয়া হয় বিমানবন্দর, বিচ্ছিন্ন রয়েছে বিদু্যৎ সরবরাহ ও টেলিযোগাযোগ। নগরীর রাজপথ ধ্বংসস্তূপে ছেয়ে যায়। উঁচু ভবনের ধ্বংসস্তূপ রাজপথে এসে পড়লে চাপা পড়ে যানবাহন। বিভিন্নস্থানে ভূমিকম্পের সাথে অগি্নকাণ্ড শুরু হয়। একটি বৃহৎ ধ্বংসস্তূপের নিচেই অন্তত ত্রিশজন আটকা পড়েছে বলে জানা গেছে। নগরীর কেন্দ্রে বহু ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করার দৃশ্য টেলিভিশনে দেখানো হচ্ছিল। নগরীর কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত পাথরে নির্মিত ক্রাইস্টচার্চ ক্যাথেড্রালের আংশিক ধ্বংস সাধিত হয়েছে। এর কয়েকটি স্তম্ভ ও খিলান ভেঙ্গে পড়ে। রয়টার্স ও বিবিসি জানায়, উদ্ধার তৎপরতায় সেনাবাহিনী নিয়োগ করা হয়েছে। রাজপথে ঠাঁই নিয়েছে বহু মানুষ। নগরীর মেয়র বলেছেন, চার লাখ মানুষের বসতি এই নগরী যুদ্ধবিধ্বস্ত নগরীতে পরিণত হয়েছে। বিদু্যৎ ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি পানি সরবরাহের প্রধান সব পাইপলাইন ফেটে গিয়ে রাজপথে বন্যার সৃষ্টি হয়। আহতদের হাসপাতালে নেয়ার ক্ষেত্রে অ্যাম্বুলেন্স সঙ্কট দেখা দেয়।