Friday, February 18, 2011

মাংসে আল্লাহু লিখা নাম



শেফাইল উদ্দিন,ঈদগাঁও :

ককসবাজার সদর উপজেলার জালালাবাদের একটি বিয়ে বাড়ীতে রান্না করা মাংস আল্লাহু লিখা নাম দেখা গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে ১৭ ফেব্রুয়ারী ইউনিয়নের পূর্ব লরাবাক গ্রামে। সরেজমিনে দেখা যায়,জালালাবাদ পূর্ব লরাবাক গ্রামের গ্রামের আহমদ হোছনের কন্যার শুভ বিবাহ অনুষ্টানে বাবুর্চি তরকারী বেড়ে দেওয়ার সময় একটি মাংসের টুকরা হাড়ির মধ্যে ভেসে উঠতে দেখলে কৌতুহল বসত সে মাংসের টুকরাটি হাড়ি থেকে তুলে আনলে তাতে মাংসের গায়ে স্পস্টাক্ষরে আল্লাহু নাম লিখা দেখতে পায়। এ ঘটনা কয়েক মুহুর্তের মধ্যে সারা গ্রামের ছড়িয়ে পড়লে হাজার হাজার উৎসুক জনতা মাংসের টুকরাটি এক নজর দেখতে ভীড় জমায়। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

Clinton broadens terror fight


“We face a common threat posed by the terrorists and Al-Qaeda but our partnership goes beyond counterterrorism,” Clinton said in a statement after about two hours of talks with Yemeni President Ali Abdullah Saleh.

“We are focused not just on short-term threats but long-term challenges,” she added as Saleh stood beside her. “We support an inclusive political process that will in turn support a unified, prosperous, stable, democratic Yemen.”
The US Embassy in Sanaa said Clinton was in Yemen for a half-day visit “bearing the message of a 'long-term partnership.'”
Clinton, who is on a five-day tour of the Arabian Peninsula, met Saleh for talks and lunch under heavy security at the presidential palace in this ancient city renowned for its ornate mud-brick buildings.
The Yemeni embassy in Washington released a statement saying: “Yemen is keen on continuing bilateral discussions to address development and security challenges.”
Washington is anxious for Yemen, next door to the world’s top oil exporter, to step up its fight against an Al-Qaeda wing based in the Arabian Peninsula state where militants have attempted ambitious attacks against US and Western targets.
Clinton was in Sanaa seeking to convey to the Yemeni government the urgency of defeating Al-Qaeda’s ideology by promoting long-delayed economic and political reforms.
“It’s not enough to have military-to-military relations,” Clinton said before the talks. “We need to try to broaden the dialogue. We need to have this dialogue with the government.”
Yemen-based Al-Qaeda militants, engaged in hit-and-run attacks on Yemeni forces in recent months, have also grabbed the focus of Washington with failed plots to bomb cargo planes in October and to blow up a US passenger jet in 2009.
Washington has been quietly ramping up its role in Yemen, hoping to stop the slide toward state failure in a country also facing separate domestic rebellions in the north and south in addition to an Al-Qaeda resurgence.
But the United States is also acutely aware that too big of a footprint could exacerbate fierce anti-American sentiment in Yemen and undermine Saleh’s already weak central government.
Clinton said Yemen recognized the threat posed by Al-Qaeda’s Yemen-based arm and “has become increasingly committed to a broad counterterrorism strategy.”
US-Yemen relations have, however, been strained by Washington’s desire for a quicker pace of economic and political reforms, which it hopes would slow recruitment by militants, an aide to US President Barack Obama said last month.
Clinton was not expected to bring any new aid to the table in Sanaa, but said Washington was seeking to rebalance its $300 million aid package, now weighted in favor of security and military assistance.
Speaking later at a town-hall meeting, Clinton said she was in Yemen to show the United States shared its commitment in the fight against Al-Qaeda and other extremists who posed a threat in the country and beyond.
But she stressed it was a joint vision for a unified, stable, democratic and prosperous Yemen where civil society had the room to operate, but Al-Qaeda did not.

হুমকির মুখে জর্দানের রাজতন্ত্র


তেহরান রেডিও : তিউনিসিয়া, মিসর, বাহরাইনের পর এবার মধ্যপ্রাচ্যের দেশ জর্দানের রাজতন্ত্র হুমকির মুখে পড়েছে। সংবিধান ও সেই সঙ্গে রাজনৈতিক সংস্কারের দাবিতে বিপুল সংখ্যক বিক্ষোভকারী যাদের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য সংখ্যক ছাত্ররাও ছিলেন বুধবার রাস্তায় নেমে আসেন। রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহর ক্ষমতা হ্রাসেরও দাবি জানান তারা। বৃহস্পতিবার স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে এ খবর জানা গেছে। বুধবার জর্দানের শত শত বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র রাজধানী আম্মানের জড়ো হন। তারা সত্যিকারের অর্থনৈতিক সংস্কার এবং সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার দাবি করেন। এসব দাবিতে বিক্ষোভকারীরা রাজপ্রাসাদের বাইরে প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় ‘জনগণ তাদের নিজস্ব সরকার গঠন করতে চায়' এবং ‘সংবিধান দিয়েই সংস্কার শুরু হবে' সম্বলিত ব্যনার বহন করেন। ইরানের প্রেস টিভি এ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে। রাজধানী ছাড়াও দেশের উত্তরাঞ্চলীয় শহর ইরবিদেও বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে। একইভাবে এখানেও তারা রাজনৈতিক সংস্কার এবং সরকারি দুর্নীতি জনসম্মুখে প্রকাশেল দাবি জানান। ট্রেড ইউনিয়ন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি এবং নারীবাদী সংগঠনগুলোর সদস্যরা বিক্ষোভে অংশ নেন। বিক্ষোভ মিছিলে দারিদ্র, নিপীড়ন এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়া হয়।
১৯৫২ সালে লিখিত সংবিধানে রাজার হাতে অত্যধিক ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। তিনি চাইলেই যে কাউকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিযুক্ত করতে অথবা বরখাস্ত করতে পারেন। পারস্য উসাগরীয় দেশটিতে সম্প্রতি সরকারের অর্থনৈতিক নীতি এবং চলমান রাজনীতির বিরুদ্ধে একাধিকবার বিক্ষোভ সংঘটিত হয়েছে।
জনগণের অসন্তোষের অন্যতম একটি কারণ হলো-১৯৮০ সালে জর্দানি আদিবাসিদের কৃষিজমি অধিগ্রহণ। বানি শখর নামে এক আদিবাসী জানান, আম্মান বিমানবন্দর নির্মাণের জন্য সরকার তাদের ২ হাজার ২০০ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করেছে। কিন্তু যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়নি বলে তিনি অভিযোগ করেন। 

গ্রেপ্তার হলে গুয়ানতানামোই লাদেনের ঠিকানা: সিআইএ |



ওসামা বিন লাদেন
ওসামা বিন লাদেন
আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন আল-কায়েদার প্রধান ওসামা বিন লাদেন গ্রেপ্তার হলে কুখ্যাত গুয়ানতানামো বে কারাগারই হবে তাঁর ঠিকানা। একইভাবে সংগঠনটির দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা আইমান আল জাওয়াহিরি ধরা পড়লে তাঁকেও সেখানে বন্দী রাখা হবে। মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) পরিচালক লিও পানেট্টা গত বুধবার এ তথ্য জানিয়েছেন। আল-কায়েদার শীর্ষস্থানীয় নেতারা ধরা পড়লে কী হবে, সিনেটরদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
পানেট্টা বলেন, গ্রেপ্তারের পর ওসামা বিন লাদেন ও আইমান আল জাওয়াহিরিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রথমে নেওয়া হবে আফগানিস্তানের সামরিক ঘাঁটি বাগরামে। সেখান থেকে নেওয়া হবে কিউবার গুয়ানতানামো বে কারাগারে। স্থায়ীভাবে সেখানেই তাঁদের রাখা হবে।
তবে দেশটির জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক জেমস ক্ল্যাপার বলেছেন, আল-কায়েদার শীর্ষস্থানীয় নেতাদের গ্রেপ্তারের পর তাঁদের বিচার ও নিরাপত্তা নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিতে পারে। তিনি বলেন, এ জন্য লাদেন ও জাওয়াহিরির বিচারের স্থল নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মধ্যে আলোচনা হতে হবে। এই আলোচনার ভিত্তিতেই নির্ধারিত হবে আল-কায়েদা নেতাদের কোথায় বিচার হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের হাতে বন্দী সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীদের বিচার নিয়ে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান নেতাদের মধ্যে তীব্র মতপার্থক্য রয়েছে। বেশির ভাগ ডেমোক্র্যাট গুয়ানতানামো বে কারাগার বন্ধের পক্ষে অবস্থান নিলেও রিপাবলিকানরা এর বিপক্ষে। এমনকি তাঁরা সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীদের বেসামরিক আদালতে বিচারও চান না।
ক্ষমতা গ্রহণের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা গুয়ানতানামো বের বিতর্কিত কারাগার বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু কংগ্রেসে তিনি এ ব্যাপারে বরাবরই তীব্র বিরোধিতার সম্মুখীন হচ্ছেন।
ওবামার মুখপাত্র জেই কার্নি বলেছেন, গুয়ানতানামো বে কারাগার বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্তে প্রেসিডেন্ট ওবামা অনড়। কেননা সেনা কমান্ডারদের কাছে জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টি সবার আগে।
এদিকে অ্যাটর্নি জেনারেল এরিক হোল্ডার বলেছেন, ‘আমার কাছে মনে হয় না লাদেনকে জীবিত গ্রেপ্তার করা সম্ভব।’ এএফপি।

বর্ণিল বাংলায় স্বাগত বিশ্ব


রঙ, আলো আর আতশবাজিতে উজ্জ্বল ছিল গতকালের বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম। তার মাঝে নিজস্ব সংস্কৃতির ভিন্ন আ
রঙ, আলো আর আতশবাজিতে উজ্জ্বল ছিল গতকালের বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম। তার মাঝে নিজস্ব সংস্কৃতির ভিন্ন আলোয় চোখ ধাঁদিয়ে দিল শ্রীলংকা। ক্রিকেট বিশ্বকাপের উদ্বোধনীর রাতে একইভাবে আলো ছড়িয়েছে বাংলাদেশ আর ভারতের পরিচয় পর্ব
ছবি: শামসুল হক
ক্রিকেটের গায়ে রং লেগেছে অনেক দিনই। আলোর রোশনাই-ও ওয়ানডে ক্রিকেটের অপরিহার্য অনুষঙ্গ প্রায় একই সময় থেকে। ক্রিকেট ব্যাট আর বলের খেলা হতে পারে, কিন্তু ক্রিকেটের বিশ্বকাপ আলো আর রঙেরও কি নয়! ২০১১ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের যাত্রাও শুরু হলো তাই আলো আর রঙে মাখামাখি এক সন্ধ্যা দিয়েই।
উইকেটে প্রথম বল পড়ার আগে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট শুরু হয় না। সেই অর্থে এই উদ্বোধন নিছকই আনুষ্ঠানিকতা। বিশ্বকাপের আসল উদ্বোধন তো আগামীকাল বেলা আড়াইটায়। যখন পুরো বাংলাদেশ রুদ্ধশ্বাসে তাকিয়ে থাকবে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের দিকে। বাংলাদেশের ১১ ক্রিকেট-সেনানী মাঠে নামবেন ভারতকে চ্যালেঞ্জ জানাতে।
কাল রাতে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে দুই ঘণ্টার বেশি দীর্ঘ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে আকাশ আলো করে তোলা আতশবাজি তা হলে কী বার্তা ছড়িয়ে দিল? ছড়িয়ে দিল আসলে আমন্ত্রণ। ৪৩ দিনের ক্রিকেট মহাযজ্ঞের আমন্ত্রণ।
তিন দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আয়োজিত এই বিশ্বকাপের একটা আনুষ্ঠানিক সূচনা-মুহূর্ত প্রয়োজন ছিল। ১৪ দলকে একই পতাকাতলে দাঁড় করানোর প্রথম ও শেষ সুযোগও ছিল এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। গত দুটি বিশ্বকাপের মতো ১৪ দলকে দাঁড় করানো যায়নি এখানে। অধিনায়কদের প্রতীকী উপস্থিতিই জানিয়ে দিল—এটা ক্রিকেটের মহামিলনমেলা।
অধিনায়কেরা মাঠে ঢুকলেন আলোর মালা পরা রিকশা চড়ে। সবার আগে রিকি পন্টিং। সবার শেষে স্বাগতিক তিন দেশের ভারত, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ। অনুমিতভাবেই সবচেয়ে বেশি হর্ষধ্বনিটা উঠল সাকিব আল হাসানের নাম ঘোষিত হওয়ার পর। হাজার মানুষের ‘বাংলাদেশ’ ‘বাংলাদেশ’ চিৎ কার যেন প্রতিযোগিতায় নামল সাকিবদের শুভকামনা জানাতে।
বিসিবি সভাপতি, ক্রীড়ামন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ও আইসিসি সভাপতির বক্তৃতাপর্বের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে বিশ্বকাপের উদ্বোধন ঘোষণা করলেন, সেটি সত্যিকার অর্থেই ‘ডিজিটাল উদ্বোধন’। স্ক্যানারে হাত রাখতেই শুরু হয়ে গেল আতশবাজি। আকাশে উড়তে শুরু করল রংবেরঙের ঘুড়ি। শিল্পব্যাংকের গায়ে পর্দায় ফুটে উঠল বিশ্বকাপের প্রতিচ্ছবি। সেটিই রূপ বদলে হয়ে গেল ২২ গজি উইকেট আর মাঠের সবুজ জমিন। সেখানে দেয়ালে ঝুলে থাকা ‘স্পাইডারম্যানরা’ এক ওভার ক্রিকেটও খেলে ফেললেন! শেষ বলে ছক্কা, বল বাইরে যেতে যেতে হয়ে গেল বিশ্বকাপের লোগো।
পুরো অনুষ্ঠানে ক্রিকেটের ছাপ বলতে গেলে শুধু এটুকুই। অনুষ্ঠানের শেষের বাঁশি বাজাতে শঙ্কর-এহসান-লয় যখন ‘দে ঘুমাকে’ নিয়ে মঞ্চে উঠলেন, তখন আবার যেন বাজল ক্রিকেটের সুর। মাঝখানে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের মঞ্চ কখনো শ্রীলঙ্কান রূপ নিল, কখনো বা ভারতীয়, সবচেয়ে বেশি সময় ধরে চিরন্তন বাংলাদেশের। স্বাগতিক তিন দেশের কৃষ্টি-সংস্কৃতি ফুটে উঠল নাচে-গানে। 
বায়ান্ন থেকে একাত্তর—বাংলাদেশের বাংলাদেশ হয়ে ওঠার দীর্ঘ ইতিহাসও। প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় সবাইকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিতে শুরু হচ্ছে এই বিশ্বকাপ। সেটি মূর্ত হয়ে উঠল বাংলাদেশ পর্বে বর্ণমালা নিয়ে বর্ণমেলাতে। অ-আ-ক-খ হাতে যেন ভাষাসৈনিকেরা। ‘ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়’ যেমন ভাষা আন্দোলনের সূচনার কথা বলল, ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ জানিয়ে দিল সেই আন্দোলনের পরিণতি পাওয়ার গল্পও। বায়ান্নর হাত ধরেই একাত্তর। সেই একাত্তর এল বড় পর্দায় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের ছবিতে।
এ দেশের দুই সংগীত কিংবদন্তি সাবিনা ইয়াসমীন ও রুনা লায়লা গাইলেন। মাঝখানে দর্শক মাতাতে মঞ্চে এলেন মমতাজও। ব্রায়ান অ্যাডামস বড় আকর্ষণ হয়ে ছিলেন এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের। তিনি এলেন তাই সবার শেষে। তিন দেশের সংস্কৃতি ফুটিয়ে তোলা কোরিওগ্রাফি, সাবিনা-রুনা-মমতাজ, এর সঙ্গে আবার ব্রায়ান অ্যাডামস—নানা রঙের সব ফুল মিলে সুন্দর একটা ফুলের তোড়া হয়ে উঠল কি না, এই প্রশ্ন উঠতেই পারে। তবে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কাছে কতটুকু প্রত্যাশা থাকা উচিত, এই প্রশ্নও তো এখনো মীমাংসিত নয়। অলিম্পিক বা যেকোনো গেমসের উদ্বোধনী-সমাপনী অনুষ্ঠান যেমন কখনো কখনো আসল খেলার চেয়ে আলোচিত হয়ে ওঠে, ক্রিকেট বা ফুটবল বিশ্বকাপ তা কখনোই নয়।
তবে কাজের কাজটা ঠিকই করেছে কালকের এই আলো আর রঙের মেলা। ক্রিকেট-বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে পেরেছে বিশ্বকাপের আগমনী সংগীত। সবচেয়ে বেশি ছড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের মানুষের ক্রিকেট প্রেমের বার্তা। কাল সকাল থেকে ঢাকা শহরের সব পথ যেন মিশল এসে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। তবে সব পথের শেষটা স্টেডিয়ামে প্রবেশদ্বারের সঙ্গে মিলল না। স্টেডিয়ামের ভেতরে যখন বিশ্বকাপের আবাহন, বাইরে তখন হাজারো মানুষ। বড় পর্দায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটা সম্প্রচারের ব্যবস্থা করলে দুধের স্বাদ অন্তত ঘোলে মেটাতে পারত তারা। সেই কথা কারও মাথায় আসেনি। বাঙালির বিশ্বকাপ-উন্মাদনা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে ঘিরেই এমন তুঙ্গে উঠে যাবে, এটা হয়তো কল্পনাতেও আসেনি কারোর।
স্টেডিয়ামের বাইরে মানুষের মেলায় তারস্বরে ভুভুজেলা বেজে গেল। বিশাল এক লাল-সবুজ পতাকা নিয়ে শুধু শুধুই ছুটে বেড়াল কিছু কিশোর-তরুণ। বিদেশি সাংবাদিকেরা দেখলেন আর বিস্ময়ে চোখ তুললেন কপালে। সাবিনা ইয়াসমীনের কণ্ঠে ‘সারা বিশ্বের বিস্ময়...’ যেন এটিরই গীতিরূপ হয়ে অনুরণন তুলল সবার হূদয়ে। বাংলাদেশকে ‘তুমি আমার অহংকার’ বলার উপলক্ষ মনে হচ্ছে এনেই দেবে এই বিশ্বকাপ!

মাথার খুলির পানপাত্র!



ব্রিটনরা অনেক আগে থেকেই নরখাদক হিসেবে পরিচিত। এখন এটাও প্রমাণিত হলো যে, এরা পানপাত্র হিসেবে ব্যবহার করত মানুষের মাথার খুলি। ব্রিটন হলো অ্যাঙ্গলো-স্যাক্সোনদের আগে ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জে বসবাসকারী এক অসভ্য ও দুর্ধর্ষ জাতি। এদের মঙ্গোলীয় বা হুন জাতির সঙ্গে তুলনা করা চলে। সম্ভবত নিষ্ঠুরতায় এরা তাদেরও ছাড়িয়ে গিয়েছিল। লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের গবেষকরা বুধবার এ তথ্য প্রকাশ করেছেন। খবর মেইল অনলাইনের। মানুষের মাথার খুলির তৈরি পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো পানপাত্রটি আবিষ্কৃত হয় সমারসেটের চেডার জর্জ এলাকার একটি গুহা থেকে। অতিযত্ন সহকারে তৈরি করা এ পাত্রটি ১৪ হাজার ৭০০ বছর আগের বলে ধারণা করা হচ্ছে। বুধবার রাতে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। গবেষকরা জানান, এ পাত্রটি কমপক্ষে ২০ বছর আগে মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করা হয়। তবে অনুবীক্ষণ যন্ত্রের ব্যাপক উন্নয়নের পরই এর গঠনশৈলী উদ্ঘাটন করতে সক্ষম হন তারা। যদিও সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না এ পাত্রটি ঠিক কী কী কাজে ব্যবহার করা হতো। তবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি পানি এমনকি রক্ত পান করতেও কাজে লাগত। এসব মাথার খুলির পাত্র তৈরি করা হতো পরাজিত শত্রুর ছিন্ন মস্তক থেকে। আর এগুলো ব্যবহার করা হতো বিজয়ের ট্রফি অথবা মৃতদের প্রতি সম্মান জানাতে এবং বিদেহী আত্মাকে অবিনাশ রাখতে ধর্মীয় আচারের অংশ হিসেবেও এগুলো ব্যবহৃত হয়ে থাকতে পারে। আবার বিজ্ঞানীরা বলছেন, এর আরও অন্য ব্যবহারও থাকতে পারে। যেমন, খাদ্য সঙ্গটকালের জন্য নরমাংস মজুদ রাখতে এগুলো ব্যবহার করা হতো। ১৯৮০ সালের দিকে গঘের গুহা থেকে সংগৃহীত পশু ও মানুষের হাড়গোড়ের মধ্যে থেকে এরকম তিনটি খুলির পাত্র পাওয়া যায়। এগুলোর গঠনশৈলী ও গায়ে আঁকা চিহ্ন থেকে বোঝা যায়, এগুলো নরখাদকরাই ব্যবহার করত। ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম এবং ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের গবেষকরা সমপ্রতি ব্রিটনদের নরমাংস ভক্ষণের নৃশংস ইতিহাস প্রকাশ করেছেন। তারা জানান, সংগৃহীত মস্তক থেকে খুব সাবধানে মাংস পরিষ্কার করে পাথরের চাকু এবং ছোট হাতুড়ি দিয়ে যত্ন করে এসব পাত্র তৈরি করা হতো। বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল চখঙঝ ঙঘঊ-এর প্রতিবেদনে এ সংক্রান্ত প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। গবেষক সিলভিয়া বেলো জানান, ‘আমাদের ধারণা, এই জাতিটা খুবই দক্ষ ছিল। কি সুনিপুণ হাতে তারা মৃত মানুষের শরীরকে ব্যবহার করেছে।

শবব্যবচ্ছেদবিদ্যায় এদের ভালো দখল ছিল।’ প্রফেসর ক্রিস স্টিংগার বলেন, পানপাত্রগুলো খুব বেশিদিন ব্যবহার করা হতো বলে মনে হয় না। এগুলো একেবারে টাটকা টাটকাই ব্যবহার করা হতো। খুব বেশি হলে বড়জোর কয়েক দিন, সপ্তাহ বা মাস। আগামী মাস থেকে এ পানপাত্রগুলোর একটি ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামে প্রদর্শন করা হবে। চেডার জর্জ এলাকার আদি অধিবাসীরা বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার পর ১১ হাজার ৫০০ বছর আগে আরেক জাতি ওই এলাকায় বসবাস শুরু করে। ব্রিটেনে এদের বংশধরদের অনেকেই এখনও জীবিত রয়েছে।

ইসলামী বিপ্লবের ভয়ে পশ্চিমারা ভীত : খামেনি


ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেছেন, ইরানের ইসলামী বিপ্লব মধ্যপ্রাচ্য ও গোটা বিশ্বের জন্য একটা আদর্শে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে যে গণজাগরণ শুরু হয়েছে তা সুনির্দিষ্ট আদর্শ ছাড়া সফল হওয়া সম্ভব নয়। এ কারণে শত্রুরা এখন ইরানকে প্রতিরোধ ও দুর্বল করার চেষ্টা করছে। শত্রুরা কোনোভাবে ইরানকে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের জন্য আদর্শে পরিণত হতে দিতে চায় না। এসব চিন্তা থেকে পশ্চিমা কয়েকটি দেশ ইরানের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে এবং অবরোধ আরোপ করছে। এছাড়া মানবাধিকার লঙ্ঘনের অসত্য অভিযোগ তুলে তারা পানি ঘোলা করারও চেষ্টা করছে। আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেন, ইসলামী বিপ্লব বিজয় লাভের পর শত্রুরা ইরান সরকারকে দুর্বল করতে অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়েছে। এ জন্য তারা ভিত্তিহীন নানা অভিযোগে তেহরানের বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপ করেছে এবং ইরাককে দিয়ে ইরানের ওপর আট বছরের যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছিল। এসব শত্রু দেশ তেহরানকে দুর্বল করার জন্য ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানীদের হত্যার কর্মসূচি নিয়েছে। তবে তাদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে এবং ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান দিন-দিন উন্নতির দিকে এগিয়ে যাবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। ইরানের বিরুদ্ধে পশ্চিমা কয়েকটি দেশের অপপ্রচারের বিষয়ে সর্বোচ্চ নেতা বলেন, ইরান থেকে মানুষ যাতে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক জনমত বিগড়ে যায় সে জন্য এসব করা হচ্ছে।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা জোর দিয়ে বলেন, বিশ্বের বলদর্পী শক্তিগুলো যাই বলুক না কেন ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান ঠিকই শক্তিশালী হয়ে উঠেছে এবং নানা ক্ষেত্রে দারুণ উন্নতি করেছে। শত্রুরা ইরানের সরকারকে দুর্বল করার জন্য যত চেষ্টা চালাবে ইরান তত বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। মিসর ও তিউনিসিয়ায় যে বিপ্লব হয়েছে তা ইরানের ইসলামী বিপ্লব থেকে অনুপ্রাণিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি। আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেন, ইরান গত ৩২ বছর ধরে যে প্রতিরোধ চালিয়ে এসেছে তারই ফল হচ্ছে আজকের মুলিম বিশ্বের জাগরণ।

বিশ্বে খাদ্যমূল্য ‘বিপজ্জনক’ পর্যায়ে : বিশ্বব্যাংক


বিশ্বে খাদ্যপণ্যের মূল্য ‘বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে’ মন্তব্য করে বিশ্বব্যাংক প্রধান রবার্ট জোয়েলিক বলেছেন, এর ফলে বিশ্বের কয়েক কোটি দরিদ্র মানুষ খাদ্য হুমকির মুখে পড়বে। আর খাদ্যদ্রব্যের উচ্চমূল্যের কারণে নতুন করে আরও অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। খাদ্য ব্যয় মেটাতে তাদের মোট আয়ের অর্ধেকের বেশি অর্থ খরচ করতে হচ্ছে। মঙ্গলবার বিশ্বব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিশ্ব অর্থনীতিতে খাদ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি বিষয়ক এক সংবাদে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। সংবাদে বিশ্বে খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির হার নিয়ে বিশ্বব্যাংকের পর্যবেক্ষণসহ এ বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়। ফ্রান্সে জি-২০ দেশগুলোর মধ্যে বিশ্বে খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি ও এর কারণ বিষয়ক আলোচনা শুরু হওয়ার কয়েকদিন আগেই এ প্রতিবেদন প্রকাশ করল বিশ্বব্যাংক।


খাদ্যমূল্য বৃদ্ধি সম্পর্কে বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ২০১০ সালের অক্টোবর থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত সময়ে তিন মাসে ১৫ শতাংশ হারে খাদ্যমূল্য সূচক বেড়েছে। আর বছরের শুরুতেই খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির এ সূচক ২৯ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত হিসাব মতে, বিশেষ করে গম, ভুট্টা, চিনি ও ভোজ্যতেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে ২০১০ সালের জুন মাসের পর থেকে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রায় ৪ কোটি ৪০ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে।
রিপোর্ট মতে, বিশ্বে দারিদ্র্যসীমার নিচে অবস্থান করা লোকের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এদের অধিকাংশই দিনে এক দশমিক ২৫ মার্কিন ডলারের নিচে আয় করে থাকে। আর দৈনিক আয় হ্রাস পাওয়ায় খাদ্য ক্রয়ক্ষমতা হারানোর পাশাপাশি এদের অধিকাংশই অপুষ্টির শিকার হচ্ছেন। অব্যাহত খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির ফলে মধ্যপ্রাচ্য ও মধ্য এশিয়ার নাজুক রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতিতে থাকা দেশগুলোর অবস্থা আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।
আশঙ্কা প্রকাশ করে বিশ্বব্যাংক প্রধান রবার্ট জোয়েলিক বলেন, খাদ্যমূল্য বেড়ে যাওয়া মিসর আর তিউনিসিয়ার গণআন্দোলনের মূল কারণ না হলেও এটি অন্যতম একটি কারণ। আর একই কারণে মধ্য এশিয়াতেও সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থির হয়ে উঠতে পারে। আর এ অবস্থা থেকে উত্তরণ করতে হলে কৃষিখাতে আরও বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে মানানসই শস্য উত্পাদনের পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্বব্যাংক প্রধান।

হামির পদবাহরাইনে বিক্ষোভ অব্যাহত যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ : স্বাস্থ্যমন্ত্রী আল ত্যাগ




বাহরাইনে গতকাল হাজার হাজার মানুষের সরকারবিরোধী বিক্ষোভ অব্যাহত থাকে। গত দু’দিনে পুলিশের গুলিতে ছয় বিক্ষোভকারী নিহত হওয়ার পর সেখানে আন্দোলন নতুন মোড় নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। হাজার হাজার প্রতিবাদী মানুষ বুধবার বাহরাইনের রাজধানী মানামার পার্ল রাউন্ডঅ্যাবাউট চত্বরে অবস্থান করেন। কেউ কেউ বলছেন, মিসরের তাহরির চত্বরের মতো বাহরাইনের এ চত্বরও সরকারবিরোধী বিক্ষোভে বিশেষ পরিচিতি লাভ করতে পারে। তবে গতকালের সমাবেশ অনেকটা শান্তিপূর্ণ বলে সংবাদদাতারা জানাচ্ছেন। বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রী খলিফা বিন সালমান আল খলিফার পদত্যাগ ও সব ধরনের বৈষম্য অবসানের জন্য সংবিধান সংশোধনের দাবিতে স্লোগান দেন। এছাড়া গতকাল নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে সেখানে নতুন করে শোক মিছিলের আয়োজন করা হয়। তবে পুলিশ তাতে কোনো ধরনের বাধা দেয়নি। বুধবার শোক মিছিলে ছোড়া পুলিশের গুলিতে দু’জন নিহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে দেশটির বিরোধী দল সংসদ বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। বাহরাইনের জাতীয় সংসদে ৪০ আসনের মধ্যে বিরোধী দলের ১৮টি আসন রয়েছে। গতকালের হত্যাকাণ্ডের পর বাহরাইনের বাদশাহ হামাদ বিন ঈসা-আল খলিফা নজিরবিহীন শোক প্রকাশ করেছেন। তবে বিরোধী দল ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, এটা নিতান্তই কম এবং এতে আন্দোলন কর্মসূচি বন্ধ করা হবে না। দেশটিতে দীর্ঘদিন ধরে হামাদ বিন ঈসার পরিবার শাসন কাজ পরিচালনা করে আসছে এবং সমাজে নানা দুর্নীতি ও অনাচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এসব দুর্নীতির অবসান, রাজনৈতিক সংস্কার ও মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নয়নের দাবিতে বিরোধী দল এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলো আন্দোলন শুরু করেছে। এছাড়া দেশটির শতকরা ৭০ ভাগ মানুষ শিয়া সম্প্রদায়ের হলেও তারা নানাভাবে বৈষ্যম্যের শিকার হন। এদিকে বাহরাইন পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে মার্কিন সরকার বিবৃতি দিয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ফিলিপ ক্রাউলি বাহরাইন সরকার ও বিক্ষোভকারী দু’পক্ষকেই সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বাহরাইনে মার্কিন নৌ ও বিমান ঘাঁটি রয়েছে। এদিকে বিক্ষুব্ধ জনতার ওপর পুলিশি নির্যাতনের অভিযোগে বাহরাইনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. ফয়সল আল হামির পদত্যাগ করেছেন। গতকাল দুপুরে তিনি এ পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এ বিষয়ে বাহরাইনের সরকারি কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে তাত্ক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এর আগে রাজধানী মানামার পার্ল স্কয়ারে বিক্ষোভকারীদের ক্যাম্প গুঁড়িয়ে দেয়ার সময় পুলিশের রাবার বুলেটের আঘাতে তিন বিক্ষোভকারী নিহত হন। অপর দিকে পার্লামেন্টে শিয়া প্রধান বিরোধী ওয়েফাক পার্টির সংসদ সদস্য ইব্রাহিম মাত্তার নিহতের ঘটনা নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘আমি সেখানে ছিলাম। লোকজন দৌড়ে পালাচ্ছিল। এটা নিশ্চিত, দু’জন নিহত হয়েছেন। আরও অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।’ গত কয়েক দিন ধরে বাহরাইনের রাজধানী মানামায় বিক্ষোভের ফলে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। মিসরের পর আরব অঞ্চলের বেশ কয়েকটি দেশে একে একে বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়লে বাহরাইনের মানবাধিকার কর্মীরা গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বাহরাইন স্কয়ারে সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভের ডাক দেয়। বিক্ষোভ দমনে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে দেশটির দাঙ্গা পুলিশ।

এ ঘটনায় রাজধানী মানামায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং আটককৃত শত শত শিয়া মুসলিমের মুক্তি, নাগরিক অধিকার ও নতুন সংবিধানের দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠে বিক্ষোভকারীরা।

লিবিয়ায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভ, নিহত ৪: গাদ্দাফির আসন টলে উঠেছে




লিবিয়ার সরকারবিরোধীরা গতকাল দেশজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে। তবে এই বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনী দমন-পীড়ন চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করছে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো।

তিউনিসিয়া ও মিসরে সরকারবিরোধী আন্দোলনের সাফল্যে অনুপ্রেরণা নিয়ে লিবিয়ানরাও সরকারবিরোধী আন্দোলনের ডাক দিল। এ বিক্ষোভের মধ্যদিয়ে গাদ্দাফির আসন টলে উঠেছে। ইন্টারনেটের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর মাধ্যমে ‘বিক্ষোভের দিন’ পালনের আহ্বান জানায় আন্দোলন সংগঠকরা।
লিবিয়ার দুই বড় শহর বেনগাজি ও বেইদায় এক আইনজীবীকে গ্রেফতারের খবরে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষও হয়। বুধবার দিনের শেষভাগে বেইদায় দু’জন নিহত হয়েছে বলে বিবিসি নিশ্চিত করেছে। এর আগে মঙ্গলবার রাতে দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় বেনগাজি শহরে সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়। সরকারের কড়া সমালোচক হিসেবে খ্যাত আইনজীবী ফাতিহ তারবিলকে গ্রেফতারের খবরে ওই দু’শহরে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে তারবিলকে ছেড়ে দেয়া হয়। তবে বহু লোককে আটক করা হয়েছে বলেও জানা গেছে। ১৯৯৬ সালে ত্রিপলির আবু সালিম কারাগারে ১ হাজার বন্দি নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে গণহত্যার শিকার হয়। নিহত ওই ১ হাজার বন্দির পরিবারের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আইনজীবী তারবিল।
বুধবার সন্ধ্যায় দেয়া এক ভাষণে কর্নেল গাদ্দাফি বিক্ষোভ সম্পর্কে কিছু না বললেও ‘বিপ্লবীরা’ জয়ী হবে বলে মন্তব্য করেন। গাদ্দাফি বলেন, ‘সর্বত্র শত্রুর পতন হোক, পুতুলদের পতন হোক।’
তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পুতুল, ইহুদিবাদের পুতুলদের পতন ঘটছে।’ বেনগাজির সহিংসতার পর এক বিবৃতিতে লিবিয়ার এক শীর্ষ কর্মকর্তা হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ একদল মানুষকে রাতের বেলায় একসঙ্গে চলাচল করতে দেবে না। লিবিয়ার নিরাপত্তা নিয়ে ছিনিমিনি খেলা সহ্য করা হবে না।’ লিবিয়ায় নিষিদ্ধ ঘোষিত এক ইসলামী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর শতাধিক সদস্যকে বুধবার আবু সালিম কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়। তবে তাদের মুক্তির সঙ্গে বেনগাজির বিক্ষোভ-সংঘর্ষেও কোনো যোগসূত্র রয়েছে কিনা—এ বিষয়টি নিশ্চিত নয়।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দেয়ার জন্য লিবিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। ইইউ’র মুখপাত্র ব্যারোনেস অস্টন বলেন, ‘সব ধরনের সংঘর্ষ এড়াতে সহিষ্ণুতা প্রদর্শনেরও আহ্বান জানাচ্ছি আমরা।’ কর্নেল গাদ্দাফি আরব বিশ্বের নেতাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় রয়েছেন। তেলসমৃদ্ধ লিবিয়ায় ১৯৬৯ সালে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেন গাদ্দাফি।
ন্যাশনাল কনফারেন্স ফর দ্য লিবিয়ান অপজিশনসহ অন্য বিরোধী সংগঠনের আহ্বানে বিক্ষোভ দিবসের দু’দিন আগে থেকেই রাস্তায় নেমে এসে বিক্ষোভ শুরু করে জনতা। সূত্র : দ্য ডেইলি কস, বিবিসি অনলাইন
ফেসবুকের মতো সামাজিক নেটওয়ার্কের ওয়েবসাইটগুলোর তথ্য অনুযায়ী লিবিয়ার বিক্ষোভের সূচনা হয় বেনগাজি শহর থেকে। ২০০৬ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি এ শহরেই পুলিশের হাতে নিহত হয় ১৮ বিক্ষোভকারী। দিনটি স্মরণে প্রত্যেক বছর দেশটিতে ১৭ ফেব্রুয়ারি ‘বিক্ষোভ দিবস’ পালন করে আসছে।
আর এ দিবসকে ঘিরে ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ওয়েবসাইটে বিষয়টি নিয়ে উন্মুক্ত আলোচনা চলতে থাকে। এরই সূত্র ধরে দেশটির প্রশাসনবিরোধী দলের ওপর দমন-পীড়ন শুরু করে। বিরোধীদলীয় বেশ কয়েকজন নেতাকে গ্রেফতারও করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন—২০০৬ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি আন্দোলনের অন্যতম আয়োজক ফারাজ আহমিদ এবং তার পরিবারের অন্য সদস্য। মঙ্গলবার লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপলির আবু সালিম কারাগারের বন্দি হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী সংগঠনের কো-অর্ডিনেটর ফাতিহ তারবেলের গ্রেফতারের খবর দ্রুত মুঠোফোন ও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিবাদে নিহত বন্দিদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অন্য বিক্ষুব্ধরাও রাজপথে নেমে আসে।