Friday, February 18, 2011

বিশ্বে খাদ্যমূল্য ‘বিপজ্জনক’ পর্যায়ে : বিশ্বব্যাংক


বিশ্বে খাদ্যপণ্যের মূল্য ‘বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে’ মন্তব্য করে বিশ্বব্যাংক প্রধান রবার্ট জোয়েলিক বলেছেন, এর ফলে বিশ্বের কয়েক কোটি দরিদ্র মানুষ খাদ্য হুমকির মুখে পড়বে। আর খাদ্যদ্রব্যের উচ্চমূল্যের কারণে নতুন করে আরও অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। খাদ্য ব্যয় মেটাতে তাদের মোট আয়ের অর্ধেকের বেশি অর্থ খরচ করতে হচ্ছে। মঙ্গলবার বিশ্বব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিশ্ব অর্থনীতিতে খাদ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি বিষয়ক এক সংবাদে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। সংবাদে বিশ্বে খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির হার নিয়ে বিশ্বব্যাংকের পর্যবেক্ষণসহ এ বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়। ফ্রান্সে জি-২০ দেশগুলোর মধ্যে বিশ্বে খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি ও এর কারণ বিষয়ক আলোচনা শুরু হওয়ার কয়েকদিন আগেই এ প্রতিবেদন প্রকাশ করল বিশ্বব্যাংক।


খাদ্যমূল্য বৃদ্ধি সম্পর্কে বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ২০১০ সালের অক্টোবর থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত সময়ে তিন মাসে ১৫ শতাংশ হারে খাদ্যমূল্য সূচক বেড়েছে। আর বছরের শুরুতেই খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির এ সূচক ২৯ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত হিসাব মতে, বিশেষ করে গম, ভুট্টা, চিনি ও ভোজ্যতেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে ২০১০ সালের জুন মাসের পর থেকে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রায় ৪ কোটি ৪০ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে।
রিপোর্ট মতে, বিশ্বে দারিদ্র্যসীমার নিচে অবস্থান করা লোকের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এদের অধিকাংশই দিনে এক দশমিক ২৫ মার্কিন ডলারের নিচে আয় করে থাকে। আর দৈনিক আয় হ্রাস পাওয়ায় খাদ্য ক্রয়ক্ষমতা হারানোর পাশাপাশি এদের অধিকাংশই অপুষ্টির শিকার হচ্ছেন। অব্যাহত খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির ফলে মধ্যপ্রাচ্য ও মধ্য এশিয়ার নাজুক রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতিতে থাকা দেশগুলোর অবস্থা আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।
আশঙ্কা প্রকাশ করে বিশ্বব্যাংক প্রধান রবার্ট জোয়েলিক বলেন, খাদ্যমূল্য বেড়ে যাওয়া মিসর আর তিউনিসিয়ার গণআন্দোলনের মূল কারণ না হলেও এটি অন্যতম একটি কারণ। আর একই কারণে মধ্য এশিয়াতেও সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থির হয়ে উঠতে পারে। আর এ অবস্থা থেকে উত্তরণ করতে হলে কৃষিখাতে আরও বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে মানানসই শস্য উত্পাদনের পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্বব্যাংক প্রধান।