Monday, February 28, 2011

গাদ্দাফিকে ব্লেয়ারের গোপন ফোন


মানবজমিন ডেস্ক: আজ থেকে সাত বছর আগের কথা। ২০০৪ সালে মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে ‘বন্ধুর হাত’ বলে অভিহিত করেছিলেন বৃটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার। এ জন্য তাকে অনেক সমালোচনা সইতে হয়েছে। কিন্তু সেই গাদ্দাফি এখন যখন তার জনতার ওপর অমানবিক নির্যাতন করছেন তখন ব্লেয়ার তাকে গোপনে ফোন করলেন। তবে এবার বন্ধুত্বের কথা নয়। এবার তিনি বলেছেন, সরকারের বিরুদ্ধে যে গণআন্দোলন শুরু হয়েছে তাতে অংশগ্রহণকারীদের হত্যা বন্ধ করুন।

ঝিনাইদহে আ'লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ


 ঝিনাইদহে রোববার বিকালে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও দলের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফের সমাবেশ পন্ড হয়ে গেছে। সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হবার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ১০ জন ও বাকিরা বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি হয়েছেন।
আহতরা হচ্ছেন- শৈলকুপা উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা মোশারফ হোসেন, ইউপি সভাপতি আলাউদ্দীন, মতিউর রহমান, পাশান, সোহেল, বাবলু, রফিকুল ইসলাম, নূর মোহাম্মদ, ঠান্ডু, তরিকুল ইসলাম ও আব্দুল লতিফ। আহতদের মধ্যে ২ জন মিন্টু ও বাকিরা খালেক গ্রুপের সমর্থক বলে জানা গেছে।
সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ ৫টি টিয়ারসেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে। এ সময় সভামঞ্চ ও ৮টি মোটরসাইকেল, বেশ কিছু টেম্পু ভাংচুর ও প্রতিপক্ষ আব্দুল খালেকের ব্যানার এবং পোস্টারে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি মোঃ ইকবাল বাহার জানান, বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও দলের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ মঞ্চে আসন গ্রহণ করার পর পরই আওয়ামী লীগের আব্দুল খালেক গ্রুপের লোকজন মঞ্চের সামনে আসার চেষ্টা করেন।
এ সময় পুলিশ তাদের বাধা দিলে তারা হৈ চৈ শুরু করেন। ওসি জানান, সেখান থেকেই মূলত সংঘর্ষের সূত্রপাত।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঞ্চের সামনে উপস্থিত কেন্দ্রীয় সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সাইদুল করিম মিন্টুর সমর্থকরা এ সময় হৈ চৈ থামানোর চেষ্টা করলে তাদের সাথে খালেক গ্রুপের লোকজনের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়ে যায়।
দুই পক্ষের মারমুখী আচরণ ও চেয়ার ছোঁড়াছুঁড়িতে সমাবেশস্থল রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল আলম হানিফ ও ঝিনাইদহের ৩ জন এমপির সামনেই দলীয় নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে হানিফসহ আগত অতিথিরা দ্রুত নিরাপদ স্থানে চলে যান।
এ সময় লাঠিসোটা নিয়ে একদল কর্মী মঞ্চ দখল করে নেয় এবং মঞ্চের পাশে থাকা উপজেলা চেয়ারম্যান কনক কান্তি দাস ও পৌর মেয়র প্রার্থী আব্দুল খালেকের ব্যানার ও পোস্টার ছিঁড়ে তাতে অগ্নিসংযোগ করে।
সংঘর্ষের ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর পৌরসভার মেয়র প্রার্থী কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সাইদুল করিম মিন্টু জানান, তার প্রতিপক্ষ আব্দুল খালেক এই সংঘর্ষের জন্য দায়ী নন। তিনি বলেন, সংঘর্ষের সময় খালেক তার সঙ্গে ছিলেন। তিনি সমাবেশ পন্ড করার জন্য সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কনক কান্তি দাস ও ভাইস চেয়ারম্যান জেড এম রাশিদুল আলমকে দায়ী করেন।
বিষয়টি নিয়ে পৌর মেয়র প্রার্থী ও জেলা আওয়মী লীগ নেতা আব্দুল খালেক জানান, তিনি সংঘর্ষের জন্য দায়ী নন। তার কর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশে যেতে চাইলে পুলিশ ও প্রতিপক্ষ মিন্টুর লোকজন হামলা চালিয়ে তারাই সমাবেশ পন্ড করার পরিবেশ তৈরি করে। সংঘর্ষে তার ১৫ জন সমর্থক আহত হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
সংঘর্ষের সময় মঞ্চে উপস্থিত ঝিনাইদহ-৩ আসনের এমপি এড শফিকুল ইজম খান চঞ্চল জানান, কোন ভাবেই সমাবেশে মারামারি করা ঠিক হয়নি। তিনি বলেন, পৌর মেয়র নির্বাচনে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত যায় হোক এই মারামারিতে আওয়ামী লীগের সুনাম ক্ষুণ্ণ করেছে বলে তিনি মনে করেন। তিনি জানান, সন্ধ্যা ৭টায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও দলের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ হাই কমান্ডের ফোন পেয়ে ঝিনাইদহ সার্কিট হাউস ত্যাগ করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়ে যান।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর থানার ডিউটি অফিসার এসআই কামরুজ্জামান জানান, হামলার বিষয়ে থানায় এখনো কেউ মামলা করেনি। শহরে এখনো উত্তেজনা থাকায় পুলিশ এখন খুব ব্যস্ত বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, গত ৩০ ডিসেম্বর সহিংসতার কারণে বাতিল হওয়া ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সাইদুল করিম মিন্টু ও আব্দুল খালেক প্রতিদ্বনিদ্বতা করছেন। রোববারের সমাবেশ থেকে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থিতা ঘোষণার গুজব ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং পরবর্তীতে সংঘর্ষে রূপ নেয়।

কিডনি ও লিভার প্রতিস্থাপন সহায়ক ঔষুধ আবিস্কার


 (শীর্ষ নিউজ ডটকম): দেশে এই প্রথমবারের মত অরগান ট্রান্সপ্ল্যানটেশনের ক্ষেত্রে সহায়ক ঔষুধ প্রস্তুত করছে টেকনো ড্রাগস লিমিটেড। কিডনি কিংবা লিভার এক মানবদেহ থেকে অন্য দেহে স্থাপনের সময় এটি ব্যবহ্রত হয়ে থাকে। ঔষুধটি শীঘ্রই বাজারজাত করা হবে বলে জানা গেছে। ঔষুধটির নাম মাইকোটিল (আর)। প্রতি টেবলেটের দাম ধরা হয়েছে ৫৫টাকা। আজ রোববার দুপুরে ঢাকা ক্লাবে টেকনো ড্রাগস লিমিটেড আয়োজিত সেমিনারে এ তথ্য জানানো হয়। সেমিনারে প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন বারডেমের রেজিস্ট্রার ডা. জয়নাল আবেদিন। প্রধান অতিথি ছিলেন প্রফেসর এ কে আজাদ খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রফেসর এম এ সালাম, প্রফেসর মো. আবুল মনসুর ও প্রফেসর মো. আলী।

লাদেন এখনো জীবিত

আল-কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেন এখনো জীবিত আছেন বলে দাবি করেছেন সংগঠনটির দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা আয়মান আল-জাওয়াহিরি। সম্প্রতি একটি অনলাইন ভিডিওতে লাদেনের ঘনিষ্ঠ এই নেতা তথ্য প্রকাশ করেছেন। ভিডিও ফুটেজে মুসলিম নাগরিকদেও উপর অহেতুক আক্রমণ না চালানোর জন্য লাদেন তার অনুগামীদের নির্দেশ দিয়েছেন বলে তিনি জানিয়েছেন। _খবর বর্তমান পত্রিকার

আমেরিকার টুইন টাওয়ারে ১১ সেপ্টেম্বরের আত্মঘাতী বিমান হামলার পর থেকেই লাদেন এবং আল-জাওয়াহিরি দু'জনই আত্মগোপনে আছেন। জাওয়াহিরির সাম্প্রতিক ভিডিও ফুটেজটি নিয়ে সন্ত্রাসবাদ বিশেষজ্ঞ নেইল ডোইলি বলেন, আল-কায়েদা এখন আরব দুনিয়ার বিক্ষোভকারীদের মধ্যে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে উঠেপড়ে লেগেছে।

Friday, February 25, 2011

সবার আগে মানবাধিকারের ঘোষণা দিয়েছেন মহানবী (সা.)


হজরত মোহাম্মদের (সা.) ভাষণসমূহ : একটি সামাজিক-সাংস্কৃতিক সমীক্ষা’ শিরোনামে থিসিস করেছেন ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। তার থিসিসের বিষয়-বৈশিষ্ট্য নিয়ে সাক্ষাত্কারে তিনি জানান, বিভিন্ন ভাষণে মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.) শাশ্বত ও সর্বোচ্চ মানবাধিকারের ঘোষণা পৃথিবীতে সবার আগে দিয়ে গেছেন। মহানবীর (সা.) ভাষণগুলো মানুষ ও মানবতার প্রতি তাঁর স্বর্ণালী অবদানের উজ্জ্বল স্বাক্ষর। সাক্ষাত্কার নিয়েছেন শরীফ মুহাম্মদ

মানবতার নবী হজরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনের পুরোটাই ছিল মানুষ ও মানবতার স্বর্ণালী আদর্শ ও শিক্ষায় ভরপুর। বাস্তব আচরণ ও ঘটনার বাইরে তাঁর ভাষণ-বক্তব্য থেকেও এর অগণিত নমুনা পাওয়া যায়। ব্যাপকভাবে এ প্রসঙ্গে আমরা শুধু বিদায় হজের ভাষণের কথাই জানি ও আলোচনায় আনি। কিন্তু তাঁর জীবনের প্রায় সব ভাষণ-বক্তব্যেই মানুষ ও মানবতার প্রতি তাঁর অবদানের তথ্যটি ফুটে ওঠে। ‘হজরত মোহাম্মদের (সা.) ভাষণসমূহ : একটি সামাজিক-সাংস্কৃতিক সমীক্ষা’ শিরোনামে থিসিস সম্পন্ন করে পিএইচডি অর্জন করা অধ্যাপক ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন এ কথা জানান।
চট্টগ্রাম ওমর গণি এমইএস কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির অধ্যাপক ড. খালিদকে ২০০৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এ বিষয়ে ডিগ্রিটি দেয়া হয়। ৩৭০ পৃষ্ঠায় রচিত তার থিসিসটিতে রয়েছে আটটি অধ্যায়। থিসিসটির তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহ মুহাম্মদ শফিকুল্লাহ। পরীক্ষক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবির অধ্যাপক ড. আবু বকর সিদ্দিক ও ভারতের লক্ষেষ্টৗ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ও ইসলামী সভ্যতা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. শিব্বির আহমদ। ড. খালিদ জানান, তিনি তার থিসিসে মহানবীর (সা.) ৮১টি ভাষণ সংগ্রহ, ভাষান্তর ও বিশ্লেষণ করেন। ভাষণগুলোর মাঝে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বিদায় হজের ভাষণ, মক্কা বিজয়, তাবুক প্রান্তর, গাদির খুম, বদর, ওহুদ প্রান্তর, মদিনার প্রথম ভাষণ, দাজ্জালের ব্যাপারে সতর্কতা, মুহাজির-আনসারের সমাবেশ, মক্কায় নেতৃস্থানীয়দের জন্য আয়োজিত ভোজসভা, আকাবা উপত্যকা, মসজিদে নববী ও মুতার যোদ্ধাদের বিদায় দানকালে দেয়া ভাষণগুলো।
এক প্রশ্নের জবাবে ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন জানান, মহানবীর (সা.) ভাষণে সামাজিক নিরাপত্তা, অসাম্প্রদায়িক সহাবস্থানের প্রেরণা ও রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা রক্ষার চেতনা প্রস্ফুটিত। এছাড়াও মহানবীর (সা.) ভাষণে রয়েছে ধর্মের সঙ্গে সমাজ-সংস্কৃতির সম্পর্ক, মানবাধিকার, নারীর মর্যাদা ও শিশুর অধিকার, অধীনস্থদের সঙ্গে মানবিক আচরণ, সহিষ্ণুতা, সহমর্মিতা, ভ্রাতৃত্ববোধ, আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, যুদ্ধক্ষেত্রে নৈতিকতা, মানবসেবা, ক্ষমা ও ঔদার্য, বাড়াবাড়ি বিষয়ে সতর্কতা, খতমে নবুওয়ত, জিহাদ, সুদমুক্ত অর্থনীতি, আত্মীয়তার সম্পর্ক সুদৃঢ়করণ, ব্যক্তি ও ব্যাষ্টিক দায়িত্ববোধ, সামাজিক ন্যায়বিচার, দাসমুক্তি, বর্ণ ও গোত্রীয় বৈষম্যের অবসান এবং শ্রমের মর্যাদা সম্পর্কিত বহুবিধ নির্দেশনা ও আলোকপাত।
মানবাধিকার রক্ষায় মহানবীর (সা.) ভাষণ ও নির্দেশনার ভূমিকা সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বিভিন্ন ভাষণের ধারাগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, মহানবী (সা.) শাশ্বত ও সর্বোচ্চ মানবাধিকারের ঘোষণা সবার আগে দিয়ে গেছেন। ১২১৫ সালের ম্যাগনাকার্টা, ১৬২৮ সালের পিটিশন অব রাইটস, ১৬৭৯ সালের হেবিয়াস কর্পাস অ্যাক্ট, ১৬৮৯ সালের বিল অব রাইটস এবং ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা মানুষের সামনে আসার বহু শত বছর আগেই মানবতার ঝাণ্ডাবাহী মহানবীর (সা.) ভাষণে মানুষের আর্থ-সামাজিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক অধিকার ঘোষিত হয়েছে।
থিসিস সম্পন্ন করতে ড. খালিদ তিনটি দেশের বিভিন্ন ইসলামী প্রতিষ্ঠান ও লাইব্রেরি মন্থন এবং পৃথিবী বিখ্যাত ইসলামী স্কলারদের সাক্ষাত্কার গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে নির্দিষ্টভাবে ৮৬টি আরবি, ৮৫টি ইংরেজি, ৩০টি উর্দু, ৬টি ফার্সি, ৫টি বাংলা গ্রন্থ ও ১৫টি সাময়িকী অধ্যয়ন করেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সিরাত বিশ্বকোষের চতুর্দশ খণ্ডে তার থিসিস থেকে নেয়া মহানবীর (সা.) ভাষণগুলো মূল আরবিসহ বাংলা তরজমা ‘রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর খুতবাসমূহ’ নামে ছাপা হয়েছে। ষ

আত্মসম্মান বাঁচাতে ঘর থেকে সবাইকে বেরিয়ে আসার আহবান খালেদার


 আত্মসম্মান বাঁচাতে ঘর থেকে সবাইকে বেরিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন বিরোধী দলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, বাংলাদেশের আকাশে শকুনের আনাগোনা এবং নীচে নেকড়েদের ঘেউ ঘেউ শুরু হয়েছে। বিভিন্ন দেশে নিপীড়ত মানুষ জেগে উঠছে। দেশ আজ সংকটের পথে, ফলে আত্মসম্মান বাঁচাতে ঘর থেকে সবাইকে বেরিয়ে আসতে হবে।
শুক্রবার বিকেলে ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চে দলের এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহবান জানান। পিলখানায় বিডিআর সদরদপ্তরে ২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি সংঘটিত নৃশংস হত্যাকান্ডে নিহত সেনা কর্মকর্তাদের স্মরণ করতেই বিএনপি এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
বিপর্যয়ের আগেই সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ। চাপের মুখে অসম্মানজনকভাবে বিদায় নিতে না চাইলে অবিলম্বে পদত্যাগ করুণ। মধ্যবর্তী নির্বাচন দিন। অন্যথায় আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণ ক্ষমতা ছাড়া করবে।
পিলখানা হত্যাকান্ডের ঘটনা থেকে জনগণের দৃষ্টি অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার জন্য বৃহস্পতিবার বিদেশি শিল্পীদের নিয়ে গানের আয়োজন করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলেও তিনি সতর্ক করেন।
ভাষা শহীদদের অমর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পিলখানার মর্মান্তিক হত্যাযজ্ঞে সেনাবাহিনীর যেসব মেধাবী চৌকষ অফিসার সেদিন জীবন দিয়েছিলেন তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় বসার পর থেকে জাতীয় জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে একের পর এক কলঙ্কের অধ্যায় রচনা করে চলেছে। তারা সরকার গঠনের দুই মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ঘটে যায় পিলখানা হত্যাকান্ডের মতো ভয়ঙ্কর বিপর্যয়। এটি এ সরকারের প্রথম এবং আমার বিবেচনায় সবচেয়ে শোচনীয় কলংকজনক ঘটনা। দেশদ্রোহী চক্রের ক্রিড়নক হয়ে মুষ্টিমেয় কিছু বিপথগামী লোক ১৯৮১ সালে বাংলাদেশের জননন্দিত নির্বাচিত রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমানকে হত্যা করেছিলো।
তিনি বলেন, দীর্ঘ দিনের রাজপথের অভিজ্ঞতা আমাকে বলে দিচ্ছে উত্তাল আরেকটি দুর্বার আন্দোলনের জন্য সারাদেশেই আজ টান টান উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ তৈরি আছে। বাংলাদেশে অনতিবিলম্বে ক্ষমতার শান্তিপূর্ণ হস্তান্তরের মাধ্যমেই কেবল অনিবার্য উত্তাল গণঅভূত্থান পাশ কাটানো সম্ভব।
বেগম জিয়া বলেন, কোনো যুদ্ধের সময় ভিনদেশী আক্রমনকারীরা চরম অপমানের মাধ্যমে প্রতিপক্ষের মনোবল ভেঙ্গে দেয়ার জন্য যে-সব বর্বর পন্থা অবলম্বন করে থাকে, পিলখানায় সে সবই প্রত্যক্ষ করার দুর্ভাগ্য আমাদের হয়েছে। বেগম জিয়া বলেন, দুই বছর পেরিয়ে গেলেও পিলখানা হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায্য বিচার আজো হয়নি। নিশ্চিত এ সরকারের আমলে এই বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের সুবিচার হবে না। বিচারের নামে হবে প্রহসন। এখন বাংলাদেশে দেশপ্রেমিক সরকারের বিকল্প নেই বলে দাবি করেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সীমান্তে প্রতিনিয়ত নিরস্ত্র বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা করা হচ্ছে। ফেলানীর মতো নিস্পাপ কিশোরীদের মৃতদেহ কাঁটাতারে ঝুলছে।
সরকার কেবল রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দীদের নয়, দেশের সম্মানিত বরেণ্য নাগরিকদেরও অপমান হেনস্থা করছে। শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শাসক পরিবারের এক বরপুত্র হাজার কোটি ডলার লুট করে বিদেশি ব্যাংকে অর্থ জমিয়েছে।
তিউনিশিয়া, মিসর, লিবিয়ায় বিক্ষোভ চলছে বলে সরকারকে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বেগম জিয়া আরো বলেন, জনগণ রাজপথে নেমে আসলে ঠেকাতে পারবেন না। তাই এখনোও যদি সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় না হয় তবে এ সরকারের পরিণতিও ভয়াবহ হবে। খালেদা জিয়া বলেন, আ'লীগ হরতাল ডেকে এদেশকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আমরা আ'লীগের অনেক অত্যাচার সহ্য করেছি। বিশ্বকাপের জন্য আন্দোলন স্থগিত রেখেছি। তিনি বলেন, মইন উ ফখরুদ্দীন পৃথিবীর যেখানেই থাকুক না কেন জনগণের সম্মুখে তাদের বিচার হবে। রিমান্ড বন্ধ করে তিনি বিএনপি নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি করেন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) আসম হান্নান শাহ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, অধ্যাপক মাহাবুব উল্লাহ, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান প্রমুখ।
(শীর্ষ নিউজ ডটকম/

ত্রিপোলি রক্ষায় মরিয়া গাদ্দাফি


লিবীয় নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি দেশটির পূর্বাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকায় তার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যখন রাজধানী ত্রিপোলি রক্ষায় মরণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন তখন তিনি আন্দোলন বিক্ষোভের সব দায় ওসামা বিন লাদেন ও তার আল-কায়েদার উপর চাপিয়ে দিয়েছেন। গাদ্দাফি বলেছেন, আল-কায়েদা দেশের তরুণদের বিভ্রান্ত করে বিপথে চালিত করছে। গতকাল বৃহস্পতিবার অজ্ঞাত স্থান থেকে টেলিফোনের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় টিভিতে বিবৃতি দিয়ে গাদ্দাফি এই দাবি করেন।

গদি রক্ষায় মরিয়া চেষ্টা করলেও গাদ্দাফি দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। বিক্ষোভকারীরা তবরুক ও বেনগাজীসহ পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন নগরী নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর সেখানকার প্রশাসন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। ফলে ব্যাপক লুটপাটের ঘটনা ঘটছে। এমনকি লিবীয় সৈন্যদের একটি বড় অংশ গণঅভু্যত্থানের প্রতি বিক্ষোভকারীদের সমর্থন দিচ্ছে। এর আগে মঙ্গলবার গাদ্দাফি ঘোষণা দিয়েছিলেন, ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে তিনি মৃতু্য পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবেন। তবে লড়াই চালানোর মতো লোক তিনি আর পাচ্ছেন না বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। গাদ্দাফি সরকারের মন্ত্রী এবং সরকারি কর্মকর্তারাও এখন নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রেখে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করছে। তাদের একটি বড় অংশ বিক্ষোভকারীদের দলে যোগও দিয়েছে। গতকালও রাজধানী ত্রিপোলিতে গাদ্দাফির অনুগত বাহিনী, পুলিশ এবং সেনারা বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালায়। অপরদিকে, বিদেশীদের দলে দলে লিবিয়া ছাড়ার ঘটনা অব্যাহত আছে।

আল-কায়েদার অঙ্গীকার ঃ এদিকে, আল-কায়েদার উত্তর আফ্রিকা শাখা লিবিয়ায় মোয়াম্মের গাদ্দাফির বিরুদ্ধে গণআন্দোলনে সাধ্যমতো সহায়তা দেয়ার অঙ্গীকার করেছে। আল-কায়েদা ইন দ্য ইসলামিক মাগরেব (একিউআইএম) এক বিবৃতিতে জানায়, 'আমরা আপনাদের সহায়তায় সর্বশক্তিমান আলস্নাহর রহমতে সাধ্যমতো সবকিছু করবো। কারণ আপনারা প্রত্যেক মুসলমানের অধিকার আদায়ের জন্য লড়ছেন যারা আলস্নাহ ও তার রাসুলকে ভালবাসেন।' ওয়েবসাইটে পাঠানো এক বার্তায় একিউআইএম মিসর ও তিউনিসিয়ায় সরকার বিরোধী সফল গণঅভু্যত্থানের প্রশংসা করে বলেছে, ঠক, পাপী ও ঘৃণ্য গাদ্দাফিরও একই পরিণতির সময় এসেছে। আল-কায়দা আরো বলে, 'আমরা লিবিয়ায় বিপস্নবের প্রতি আমাদের সমর্থন জানাচ্ছি এবং আমরা তাদের আশ্বস্ত করছি যে, আমরা তাদের পাশে রয়েছি।'

গাদ্দাফির দাবি ঃ এদিকে, গাদ্দাফি এই এই আন্দোলনের দায় চাপিয়ে দিয়েছে আল-কায়দার উপর। তিনি বলেছেন, আমার দেশের শান্তিপূর্ণ নাগরিকরা এমন সহিংস আচরণ করতে পারে না। তিনি হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, যারা এই বিশৃঙ্খলায় জড়িত তাদের সবাইকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে কঠোর শাস্তি দেয়া হবে। গাদ্দাফি তার বক্তব্যে বলেন, সদ্য বিশ বছরে পা দেয়া তরুণদের এভাবে রাস্তায় নামানোর ক্ষমতা আছে একমাত্র আল-কায়েদার। শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত তিনি তাদের বিরুদ্ধে লড়বেন বলে গতকালও ঘোষণা দেন।
ইত্তেফাক ডেস্ক

২০৫ রানেই আটকে গেল বাংলাদেশ


বিশ্বকাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে অবশেষে ২০৫ রানে অলআউট হয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নিয়মিত উইকেট হারিয়ে চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে টাইগাররা। অবশেষে স্বাগতিকরা ৪৯.২ ওভারে টাইগাররা সব উইকেটে ২০৫ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়। ইনিংসে বাংলাদেশ ৪৮.৪ ওভাবে ২০০ রান পূর্ণ করে।
পঞ্চম উইকেট জুটিতে মুশফিকুর রহিম ও রকিবুল হাসান বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করলেও তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। দলীয় ১৪৭ রানে মুশফিক বিদায় নেন। এ দুই জন পঞ্চম উইকেট জুটিতে ৬১ রান সংগ্রহ করেন। মুশফিক ও রকিবুল ধীর গতিতে রান তুলে ক্রিজ আকড়ে থাকার চেষ্টা চালান। মুশফিক ৬৬ বলে ৩৬ রান করে ডকরেলের বলে আউট হয়েছেন। মুশফিকের পর মোহাম্মদ আশরাফুল মাঠে নামলেও ৬ বল মোকাবেলা করে ১ রানে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। এরপর রকিবুল ব্যক্তিগত ৩৮ রানে রান আউটের শিকার হলে চরমভাবে বিপর্যয়ে পড়ে সাকিব বাহিনী।
যদিও স্বাগতিক দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস ইনিংসের দারুন সূচনা করেন। উদ্বোধনী জুটিতে মাত্র ৬.৩ ওভারেই স্বাগতিকরা ৫৩ রান সংগ্রহ করে। কিন্তু হঠাৎ করেই বাংলাদেশ ইনিংসে ছন্দপতন ঘটে। মাত্র ১৯ রানের ব্যবধানে প্যাভিলিয়নে ফিরেন ওপেনার ইমরুল কায়েস, তামিম ইকবাল ও জুনায়েদ সিদ্দিকী। এরপর দলীয় ৮৬ রানের মাথায় অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বিদায় নিলে দারুন চাপে পড়ে স্বাগতিকরা। ব্যক্তিগত ১৬ রানে বোথার বলে কট এন্ড বোল্ড হন সাকিব।
শুক্রবার মিরপুর শেরে-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের বি-গ্রুপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মুখোমুখি হয় স্বাগতিক বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ড। ম্যাচটি শুরু হয় স্থানীয় সময় দুপুর আড়াইটায়। বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে টাইগার দলপতি সাকিব আল হাসান টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন। বাংলাদেশের ইনিংস শুরু করতে নামেন তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস। এ দুইজন ইনিংসের শুরুতেই চড়াও হন আইরিশ বোলাদের উপর। কিন্ত দলীয় ৫৩ রানে জন মুনির বলে ইমরুল কায়েস বিদায় নিলে টাইগাররা প্রথম উইকেট হারায়। এরপর ব্যাক্তিগত ৩ রানে রান আউট হন জুনায়েদ। আইরিশরা সবচেয়ে বড় আঘাত আনে ৪৪ রান তামিম ইকবালকে ফিরিয়ে দিয়ে। তামিম ৭ চারে ৪৪ রানে যখন আউট হন তখন বাংলাদেশের সংগ্রহ ১১.১ ওভারে ৬৮ রান। তামিমকে আউট করেন আইরিশ বোলার আন্দ্রে বোথা।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান ও স্পিনার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের পরিবর্তে খেলেন মোহাম্মদ আশরাফুল।
 ঢাকা, ২৫ ফেব্রুয়ারি (শীর্ষ নিউজ ডটকম)

প্রশিক্ষণ ছাড়াই চালানো যাবে সাবমেরিন


সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক সাবমেরিন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার উপযোগী সাবমেরিন তৈরি করেছে যেটি কোনোরকম প্রশিক্ষণ ছাড়াই চালানো সম্ভব। সমুদ্র তলদেশের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এই সেমি-সাবমেরিনটি নিয়ে ডুবে থাকা যাবে আট ঘণ্টারও বেশি সময়। খবর ম্যাশএবল-এর।
সংবাদ মাধ্যমটি জানিয়েছে, ইগো কম্প্যাক্ট নামের এই সেমি-সাবমেরিনটি তৈরি করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার রাওনহেজ।
জানা গেছে, এই সাবমেরিনটি পুরো পানির নিচে ডুবে থাকে না বরং পন্টুনের মতো ভেসে থাকে। সাবমেরিনটির একটি পানিনিরোধী কমপার্টমেন্ট মাঝ বরাবর পানির মধ্যে ঝুলে থাকে। আর সাবমেরিনটিতে লাগানো ব্যাটারির সাহায্যে দ্রুতগতিতে আট ঘণ্টারও বেশি সমুদ্র নিচে ঘুরে বেড়ানো যায়। জানা গেছে, বিভিন্ন রিসোর্ট, বা ইয়টের মতোই মজা করে সমুদ্রে ঘোরার মজা নিতে ব্যবহার করা যাবে এই সেমি-সাবমেরিন।

লিবীয় সরকারের আচরণ নিষ্ঠুর ও অগ্রহণযোগ্য : ওবামা


এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে লিবিয়ার দিকেই সবার দৃষ্টি নিবদ্ধ। জনগণের বিক্ষোভ ক্রমেই হয়ে উঠছে দুর্বার। কোনো হুমকি-ধামকি কাজে আসছে না। গাদ্দাফি সমর্থকরা হামলা চালাচ্ছে। চলছে নিপীড়ন, নির্যাতন। নিরাপত্তা পরিষদ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সঙ্কট নিরসনে আহ্বান জানিয়ে আসছে। ওবামাকে হস্তক্ষেপের জন্য যুক্তরাষ্ট্রেই চাপ বাড়ছে। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা লিবিয়ায় আন্দোলনকারীদের ওপর ক্ষমতাসীনদের দমন-পীড়নকে 'নিষ্ঠুর ও অগ্রহণযোগ্য' আখ্যা দিয়ে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, সবকিছুর পরিণতি লিবীয় সরকারকে ভোগ করতে হবে। লিবিয়ার নেতা কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফির সমর্থকরা রাজধানী ত্রিপলিসহ পশ্চিমাঞ্চল দখলে রাখার ঘোষণা দেয়ার পরপরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট এই মন্তব্য করেন বলে বৃহস্পতিবার বিবিসি অনলাইন জানায়। লিবিয়ার সরকারবিরোধী বিক্ষোভ ও সহিংসতার পর প্রথমবারের মতো এ বিষয়ে মুখ খুললেন ওবামা। ওবামা কর্নেল গাদ্দাফির সরাসরি সমালোচনা না করলেও তার সমর্থকদের সহিংসতায় উস্কে দেয়ায় তীব্র নিন্দা জানান। হোয়াইট হাউস থেকে ওবামা বলেন, এই দুর্ভোগ ও রক্তপাত নিঃসন্দেহে নিষ্ঠুরতা, যা অগ্রহণযোগ্য। ওবামা বলেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক নিয়মের পরিপন্থী এবং সাধারণ শিষ্টাচার বহির্ভূত। এই সহিংসতা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। ওবামা আরও বলেন, তিনি তার প্রশাসনকে এ সমস্যা মোকাবিলায় যে কোনো ধরনের পদক্ষেপের ব্যাপারে প্রস্তুত থাকতে বলেছেন। এ পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্র একাই কিংবা তার মিত্রদের সঙ্গে নিয়েও গ্রহণ করতে পারে। অবশ্য কী সেই পদক্ষেপ সে ব্যাপারে কিছু বলেননি ওবামা। এদিকে ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকরা জানিয়েছে, যদি প্রয়োজন হয় লিবিয়ার ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের ব্যাপারে ইইউ প্রস্তুত রয়েছে। অন্যদিকে রাজধানী ত্রিপলি এখন ভীতির নগরী। অধিবাসীরা ঘরের বাইরে বেরুতে ভয় পাচ্ছে। কারণ সরকার সমর্থকরা তাদের ওপর গুলি চালাতে পারে। হাজার হাজার বিদেশি লিবিয়া ত্যাগ করার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানা গেছে। লিবিয়ায় ঠিক কত মানুষ নিহত হয়েছে তার প্রকৃত পরিসংখ্যান জানা এ মুহূর্তে অসম্ভব। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ অন্ততপক্ষে ৩০০ লোকের মৃত্যু নিশ্চিত করলেও ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন ফর হিউম্যান রাইটস দাবি করছে অন্ততপক্ষে ৭০০ নিহত হয়েছে। এর আগে লিবিয়ায় আন্দোলনকারীদের ওপর সরকারের দমন-পীড়নের তীব্র নিন্দা জানায় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। এক বিবৃতিতে নিরাপত্তা পরিষদের পক্ষ থেকে লিবীয় সরকারের প্রতি অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানানো হয়।
১৫টি সদস্য রাষ্ট্রের সমন্বয়ে গঠিত জাতিসংঘের এই পরিষদ বিবৃতিতে বলে, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার যে দায়িত্ব্ তা পূরণ করতে হবে। পাশাপাশি সহিষ্ণু আচরণ, মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের প্রতি সম্মান দেখানোরও আহ্বান জানানো হয় ওই বিবৃতিতে। মঙ্গলবার রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত টেলিভিশনে দ্বিতীয় দফা ভাষণ দেন গাদ্দাফি। ৭৫ মিনিটের ওই ভাষণে গাদ্দাফি বলেন, এখনও বিক্ষোভকারীদের ওপর শক্তি প্রয়োগ করা হয়নি, প্রয়োজন হলে তা করা হবে। এ সময় তিনি বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালানোর জন্য তার সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানান। গাদ্দাফি বলেন, তিনি দেশ ছাড়বেন না, প্রয়োজনে শহীদ হবেন। গত সপ্তাহে লিবিয়ায় রাজনৈতিক সংস্কার ও গাদ্দাফির ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়।

অ্যাসাঞ্জকে সুইডেন পাঠাবে ব্রিটেন


উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে সুইডেনে হস্তা-ন্তরের রায় দিয়েছেন ব্রিটিশ আদালত। গতকাল দক্ষিণ লন্ডনের বেলমার্শ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক হাওয়ার্ড রিডল এই রায় দেন। অ্যাসাঞ্জের আইনজীবীরা অবশ্য বলেছেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে তারা আপিল করবেন। বিবিসি
যৌন অপরাধের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে সুইডেনে হস্তান্তর করা হবে। দুই নারীর সঙ্গে প্রতারণামূলক যৌন সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগ রয়েছে উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতার বিরুদ্ধে। অবশ্য এ অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন অ্যাসাঞ্জ।
আইনজীবীরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, সুইডেনে অ্যাসাঞ্জ হয়তো সুবিচার পাবেন না। তাছাড়া মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের কয়েক হাজার গোপন বার্তা প্রকাশের জন্য অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করতে পারে সুইডেন। আর যুক্তরাষ্ট্রে গেলে অ্যাসাঞ্জের মৃত্যুদণ্ড হতে পারে।
গত বছর ইরাক ও আফগান যুদ্ধ নিয়ে পেন্টাগনের কয়েক লাখ গোপন নথি এবং বিভিন্ন দেশে দূতাবাসের সঙ্গে ওয়াশিংটনের বিনিময় করা কয়েক হাজার গোপন বার্তা প্রকাশ করে বিশ্বব্যাপী ঝড় তোলে অ্যাসাঞ্জের প্রতিষ্ঠান উইকিলিকস। পররাষ্ট্র দফতরের মোট আড়াই লাখ গোপন বার্তা প্রকাশের ঘোষণা দেয় ওয়েবসাইটটি।
এতে যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নাজুক অবস্থায় পড়ে এবং উইকিলিকসের কার্যক্রম বন্ধের জন্যও নানাভাবে চেষ্টা চালানো হয়।
একপর্যায়ে সুইডিশ পুলিশ যৌন অপরাধের অভিযোগে অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
গত ৭ ডিসেম্বর লন্ডন পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন অ্যাসাঞ্জ। নয় দিন কারাবাসের পর কঠিন কিছু শর্তে জামিনে মুক্তি পেয়ে লন্ডনে অবস্থান করছেন তিনি।

মাহমুদুর রহমানের বইয়ের জন্য ক্রেতার ভিড়


বিকাল তখন চারটা বাজে। অমর একুশে বইমেলায় হাসি প্রকাশনীর স্টলের সামনে প্রচণ্ড ভিড়। মিনিট দশেকের মধ্যে স্টলটির সামনে পড়ে ক্রেতার দীর্ঘ সারি। নানা বয়সের পাঠক, ক্রেতা এসে সারিতে দাঁড়ান। দুঃসাহসী সম্পাদক, প্রখ্যাত কলামিস্ট মাহমুদুর রহমানের লেখা সদ্য প্রকাশিত ‘১/১১ থেকে ডিজিটাল’ ও ‘নবরূপে বাকশাল’ বই দুটি কেনার জন্য তাদের এ সারি। এবারের মেলায় বই দুটি আসার পর থেকেই কেনার জন্য পাঠকের হিড়িক পড়ে। কপি ফুরিয়ে যাওয়ায় ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে না পারায় গত বুধবার হাসি প্রকাশনীর প্রকাশক ও বিক্রেতারা যথারীতি বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হন। গতকালও বিকাল গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতার সারি দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়। বই কিনে চুপচাপ চলে যান ক্রেতারা। তবু দীর্ঘতর সারি ছিল রাত নয়টা পর্যন্ত। হাসি প্রকাশনীর বিক্রেতাদেরও গতকাল অবসরের সুযোগ ছিল না। একের পর এক পাঠকের হাতে খাকি খামে মুড়িয়ে তুলে দিতে হয় বই দুটি। অধিকাংশ ক্রেতা একসঙ্গে দুটি বই-ই কেনেন। এতো ব্যস্ততার পরও আমিন, আবদুর রব, রুবেল—তিন বিক্রেতার কারও মুখে বিরক্তির ছাপ ছিল না। এ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত মাহমুদুর রহমানের বই দুটি মেলায় পাওয়া যাচ্ছে ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে। হাসি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী হেলাল উদ্দিন জানান, বাইন্ডিংখানা থেকে বই এনে শেষ করতে পারছি না। বইটি আরও আগে ছাপতে পারলে ভালো হতো। এ স্টলে থাকা সাংবাদিক অলিউল্লাহ নোমানের ‘অন্ধকার ও নিপীড়নের কারাজীবন’ বইটিও ভালো চলছে। বইটি প্রকাশিত হয় মাতৃভাষা প্রকাশনী থেকে। গতকাল পুরো বইমেলাই জমে ওঠে। নানা বিষয়ের মিলিয়ে বই আসে ৬৮টি। এর মধ্যে মোড়ক উন্মোচন হয় ৫৩টির।
‘১/১১ থেকে ডিজিটাল, নবরূপে বাকশাল’: ‘ফেলানী যুগে যখন একটি অসম চুক্তির আওতায় ট্রানজিটসহ ভারতের বিভিন্ন চুক্তি মেনে নিতে হচ্ছে বাংলাদেশকে, তখন মাহমুদুর রহমানের লেখার অভাব দেশপ্রেমিক নাগরিকরা প্রচণ্ডভাবে অনুভব করছেন’ কথাগুলো বলেন ঢাকার ধানমন্ডির বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন। গতকাল মেলায় এসে মাহমুদুর রহমানের বই কেনার পর তিনি একথা বলেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সরকারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা বই দুটি কিনতে এসে বলেন, ‘কারাগারে থাকায় অনেকদিন দুঃসাহসী এ সম্পাদকের লেখা পড়তে পারছি না। তাঁর লেখায় রাজনীতির চুলচেরা বিশ্লেষণ, দেশের বর্তমান পরিস্থিতির সাহসী বর্ণনা, এর থেকে উত্তরণের দিকনির্দেশনা থাকে। সেজন্য বইটি কিনতে এলাম।’ 
অতীত অভিজ্ঞতা থেকে বর্তমানের পর্যালোচনা করে যে ক’জন রাজনৈতিক ভাষ্যকার ভবিষ্যত্ বাতলে দিতে পারেন, মাহমুদুর রহমান নিঃসন্দেহে তাদের মধ্যে অন্যতম। তার অনেক লেখায় প্রকাশিত রাজনৈতিক ভবিষ্যত্ ইঙ্গিত এখন অক্ষরে অক্ষরে সত্য প্রমাণিত হচ্ছে। তার এরকম অনেক লেখা দৈনিক আমার দেশ ও দৈনিক নয়া দিগন্তে প্রকাশিত হয় ২০০৮ থেকে ২০১০ সালের ৩০ মে পর্যন্ত। এসব লেখা নিয়েই এ দুটি প্রবন্ধের বই। মানবাধিকার, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, জাতীয় স্বার্থ, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, আইনের শাসনের পক্ষে তাঁর দৃঢ়তম অবস্থানের বর্ণনা আছে বই দুটির প্রবন্ধে। ‘নবরূপে বাকশাল’ বইয়ের ‘স্বাধীনতা বেচে স্বাধীনতার ঋণ শোধ’, ‘আওয়ামী লীগের ঋণ বাংলাদেশ শোধ করবে কেন’ শিরোনামের দুটি লেখায় তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষার জোরালো আহ্বান জানিয়েছেন।। 
শেষ সন্ধ্যায় টাস্কফোর্সের অভিযান : গতকাল শেষ সন্ধ্যায় মেলায় আবার অভিযান চালায় টাস্কফোর্স। টাস্কফোর্সের সদস্যরা মেলার বাইরের প্রাঙ্গণ, ফুটপাতে অভিযান চালিয়ে ভারতীয় লেখকদের পাইরেটেড বই উদ্ধার করেন। অভিযান শেষে মেলার তথ্য কেন্দ্রে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান টাস্কফোর্স কর্মকর্তা মনজুরুর রহমান। তিনি জানান, তারা ১৯ তারিখ ২৯টি স্টলকে সতর্ক করে দেন। এর মধ্যে ২০টি স্টল মালিক তাতে কর্ণপাত না করায় পরবর্তী মেলায় তাদের স্টল বরাদ্দ দেয়া হবে না। গত ২০ ফেব্রুয়ারি মেলায় চটি, নেট, নোটবই বিক্রির বিরুদ্ধে প্রথম অভিযান চালায় টাস্কফোর্স।
মোড়ক উন্মোচনের হাফসেঞ্চুরি : মেলার ২৪তম দিনে এসে মোড়ক উন্মোচনের ‘হাফসেঞ্চুরি’র রেকর্ড হলো। গতকাল নজরুল মঞ্চে ৫৩টি নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন হয়। এর মধ্যে অন্য প্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলামের সম্পাদনায় অন্য প্রকাশ থেকে গতকাল আসা রান্না বিষয়ক ‘ডানো ডেজার্ট ডিলাইট’ বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন কথাশিল্পী রাবেয়া খাতুন ও ডানোর কান্ট্রি ম্যানেজার আহমেদ কবীর। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন রন্ধন শিল্পী কেকা ফেরদৌসী।
গতকালের বই : খ্যাতিমান সাংবাদিক, কলামিস্ট ড. রেজোয়ান সিদ্দিকীর প্রবন্ধের বই ‘দুঃশাসনের দুই বছর’ মেলায় এনেছে ইছামতি প্রকাশনী। এছাড়া উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে সাহিত্য প্রকাশ থেকে এসেছে ইমদাদুল হক মিলনের গল্প ‘কিশোর গল্প’, ইত্যাদি থেকে অপূর্ব কুমার কুণ্ডুর চলচ্চিত্র বিষয়ক ‘ইউরোপের চলচ্চিত্র’, সময় থেকে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের জীবনীমূলক ‘বহে জলবতী ধারা- প্রথম খণ্ড’, ফরিদুর রেজা সাগরের সঙ্কলন ‘কিশোরসমগ্র ৭’, আবেদ খানের উপন্যাস ‘হারানো হিয়ার নিকুঞ্জ পথে’, অনিন্দ্য থেকে মাহবুব রেজার গল্প ‘আমার বঙ্গবন্ধুর গল্প’, বিভাষ থেকে আসাদ চৌধুরীর সঙ্কলন ‘নির্বাচিত ১০০ কবিতা’ ও অন্বেষা থেকে সৈয়দ শামসুল হকের অনুবাদ ‘শ্রাবণ রাজা’। অগ্রদূত মেলায় এনেছে সাংবাদিক কাফি কামালের দুটি বই ‘মেইট্টাল’ ও ‘ঋতুরঙ্গ’। 
মঞ্চের আয়োজন : বিকালে মেলামঞ্চে ‘রবীন্দ্রনাথ : না নিন্দা, না স্তু‘তি’ ও ‘রবীন্দ্রনাথের ভ্রমণসাহিত্য’ শিরোনামে দুটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনার মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন শান্তনু কায়সার ও রোবায়েত ফেরদৌস। পবিত্র সরকারের সভাপতিত্বে সভায় আলোচনা করেন ফয়জুল লতিফ চৌধুরী, রফিক কায়সার, আমিনুর রহমান সুলতান, ফারজানা সিদ্দিকা। সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেয় সাংস্কৃতিক সংগঠন শাপলা কলির আসর।

Wednesday, February 23, 2011

সোমালিয়ায় অপহৃত ৪ আমেরিকান নাবিককে হত্যা


 (শীর্ষ নিউজ ডেস্ক): ওমান উপকূল থেকে অপহৃত ৪ আমেরিকান নাবিককে সোমালি জলদস্যুরা হত্যা করেছে। গত শুক্রবার সোমালি জলদস্যুরা তাদের অপহরণ করে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী জানায় যে, তারা অপহরণের খবর পাওয়ার পর পরই একটি জাহাজ ঘটনাস্থলে পাঠায় এবং অপহরণকারীদের জাহাজ অনুসরণ করতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা গুলির শব্দ পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছেন। পরে জাহাজে আরোহন করে ২ জলদস্যুকে হত্যা করে অপহৃত ৪ আমেরিকান নাবিককেই গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে। যুক্তরাষ্ট্রের নৌ-সেনারা গুলিবিদ্ধ নাবিকদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু নাবিকরা মারা যায়। জাহাজে মৃতদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ২ জন নাগরিকও রয়েছে। নৌ-সেনারা এ সময় ১৩ জলদস্যুকে আটক করেছে।

লোভী স্ত্রীর কারণে ক্ষমতাচ্যুত আবিদিন


মানবজমিন ডেস্ক: তিউনিসিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট জিনে আল আবিদিন বিন আলীর স্ত্রী লাইলা দেশবাসীর কাছে পরিচিতি পেয়েছেন লোভী নারী হিসেবে। তাকে তুলনা করা হচ্ছে ইমেলদা মার্কোসের সঙ্গে। বলা হচ্ছে, তিনি হলেন আরবের ইমেলদা মার্কোস। তার কারণেই ডুবেছেন আবিদিন। তার ছিল পর্বত সমান লোভ। তিনি সাবেক এক হেয়ারড্রেসার। গণবিস্ফোরণের সময় তার স্বামী যখন দেশ ছেড়ে পালান তখন লাইলার প্রথম পছন্দ ছিল দুবাই। সেখানে তারা রাজনৈতিক আশ্রয় নিলে তিনি ভাল কেনাকাটা করতে পারতেন। কিন্তু তার স্বামী বেছে নিয়েছেন সৌদি আরবকে। প্রেসিডেন্ট আবিদিনের বয়স ৭৪ বছর। তার স্ত্রী তার চেয়ে ২০ বছরেরও ছোট। তার নেশাই ছিল অর্থ, বিলাসবহুল গাড়ি, প্রাচুর্যময় বাড়ি। দেশবাসী যখন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য হিমশিম খাচ্ছিলেন তখন তাদের বিলাসী জীবনযাপনের কারণে ফার্স্ট ফ্যামিলিকে অনেকে ‘দ্য মাফিয়া’ বলেও অভিহিত করেন। এসব কথা গতকাল বলা হয়েছে অনলাইন ডেইলি মেইলে। জন ক্ষোভ তাই ঝরে পড়েছে তাদের বিলাসী গাড়িতে, বাড়িতে। আর এই ফাঁকে তাদের দুই কন্যা পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন প্যারিসের ডিজনিল্যান্ড হোটেলে। সেখানে তারা ব্যবহার করছেন ভিআইপি স্যুট। যার প্রতি রাতের ভাড়া ৩০০ পাউন্ড। তারা হলেন নাসরিন বিন আলী (২৪) ও তার বোন সাইরিন। তবে তারাও সুখে থাকতে পারছেন না। কারণ রোববারই ফরাসি সরকার ঘোষণা দিয়েছে সাবেক ওই প্রেসিডেন্টের পরিবারের সদস্যদের বহিষ্কার করা হবে। ধারণা করা হয়, এই পরিবার ফ্রান্সের ব্যাংকে ৩৫০ কোটি পাউন্ড জমা করেছেন।

লিবিয়ায় আতঙ্কে বাংলাদেশীরা কমিউনিটি সেন্টারে ৪৫০ জিম্মি


দীন ইসলাম: লিবিয়ায় জিম্মি থাকা ৪৫০ বাঙালি ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন। অঘটনের আশঙ্কায় বাইরে বেরুচ্ছেন না তারা। চলছে তীব্র খাবার সঙ্কট। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জিম্মি বাঙালিরা সুস্থ আছেন। তাদের আটক করে রাখা হয়েছে লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলি থেকে ১৩০০ কিলোমিটার দূরে বেনগাজি দারনায়। ওই জায়গার ‘দারনা কমিউনিটি সেন্টার’-এ তাদের জিম্মি করে রাখা হয়েছে। এমনটাই জানিয়েছে লিবিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের ক’জন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা ও জিম্মি থাকা ক’জন বাঙালি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে গতকাল লিবিয়ায় জিম্মি থাকা বাংলাদেশীদের সম্পর্কে সবিস্তারে অবহিত করেন ওই দেশের বাংলাদেশ দূতাবাসে কর্মরত প্রথম সচিব (শ্রম) আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকী। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. জাফর আহমেদ খান ও যুগ্ম-সচিবসহ মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, জিম্মি থাকা বাংলাদেশীরা লিবিয়ার ‘অওন কনস্ট্রাকশন’ নামের একটি কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন। রিয়েল এস্টেট ব্যবসার এ কোম্পানিটির মালিক একজন কোরিয়ান নাগরিক। গত রোববার এ কোম্পানিটির শ্রমিকদের ব্যারাকে হামলা চালায় লিবীয় নাগরিকরা। ওই ব্যারাকে বাংলাদেশী শ্রমিকের পাশাপাশি ভিয়েতনাম, কোরিয়া ও থাইল্যান্ডের শ্রমিকরা থাকতেন। একসঙ্গে সবার ওপর হামলা চালানোর পরপরই শ্রমিকরা বেনগাজির একটি মাদরাসায় গিয়ে আশ্রয় নেন। এরপর সরকারের নিয়োজিত বাহিনী তাদের সরিয়ে একটি কমিউনিটি সেন্টারে জিম্মি করে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এখন তীব্র খাবার সঙ্কটে পড়েছেন জিম্মিরা। এজন্য লিবিয়ার অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস কোরিয়ান কোম্পানি ‘অওন কনস্ট্রাকশন’-এর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তারা সাধ্যমতো চেষ্টা করছেন জিম্মি থাকা বাঙালিদের খাবারের ব্যবস্থা করার জন্য। ওদিকে লিবিয়ার বিভিন্ন এলাকায় বৈধ ও অবৈধ মিলিয়ে ৬০ হাজার বাংলাদেশী কাজ করছেন। রাজনৈতিক হাঙ্গামা শুরু হওয়ার পর ওইসব বাঙালি এখন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।
মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্কটের মধ্যেও ১১ শ্রম উইংয়ের কর্মকর্তা ঢাকায়
মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে এখন চলছে রাজনৈতিক সঙ্কট। এর মধ্যেও ১১টি দেশের বাংলাদেশ দূতাবাসে কর্মরত ১৪ জন শ্রম উইংয়ের কর্মকর্তাকে ঢাকায় ডেকে আনা হয়েছে। তাদেরকে ওই সব দেশে জনশক্তি রপ্তানি বাড়ানোর জন্য নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। এনিয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কয়েক জন শীর্ষ স্থানীয় কর্মকর্তার মধ্যে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে এখন চলছে রাজনৈতিক সঙ্কট। এ সঙ্কটে বাংলাদেশী শ্রমিকদের প্রতি নজর দেয়া জরুরি। এর অন্যথা হলে শ্রমিকদের নানা ভোগান্তি পোহাতে হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সৌদি আরবের রিয়াদ ও জেদ্দা এবং মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে কর্মরত কাউন্সিলর (শ্রম) ও প্রথম সচিব (শ্রম), লিবিয়া, ইরাক, বাহরাইন, কুয়েত, দুবাই, কাতার ও ওমানের প্রথম সচিব (শ্রম) এবং আবু ধাবির কাউন্সিলরকে (শ্রম) ঢাকায় আনা হয়েছে। আগামী দুই দিন জনশক্তি বাড়ানোর বিষয়ে তাদের নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল প্রথম দিনে শ্রম উইংয়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে জনশক্তি রপ্তানির হার এখন আশানুরূপ নয়। এখনই বিষয়টির দিকে নজর দিতে হবে। অন্যথায় আগামীতে ভাল করতে পারবো না। এরপর তিনি বিভিন্ন দেশে কর্মরত শ্রম উইংয়ের কর্মকর্তাদের বক্তব্য শোনেন। এর মধ্যে লিবিয়ায় কর্মরত প্রথম সচিব (শ্রম) আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকী ওই দেশে কর্মরত বাঙালিদের সর্বশেষ অবস্থা বর্ণনা করেন। এরপরের সেশনে বক্তব্য দেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান ও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. জাফর আহমেদ খান। তারা শ্রম বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান দৃঢ় করার উপর গুরুত্ব দেন।
বাংলাদেশে লিবীয় রাষ্ট্রদূতের পদত্যাগ
বাংলাদেশে নিযুক্ত লিবীয় রাষ্ট্রদূত আহমেদ আতিয়া হামাদ আল-ইমান পদত্যাগ করেছেন। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারকে নিশ্চিত করেছে লিবিয়া সরকার। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, রাষ্ট্রদূতের পদত্যাগের জন্য ঢাকায় লিবীয় দূতাবাসের অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি (কো-অপারেশন) এশতিউই এলফিলাইদনি চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। ওদিকে লিবিয়ার প্রেসিডেন্ট মুয়াম্মার গাদ্দাফীর ৪১ বছরের শাসনের অবসান ঘটাতে দেশটির হাজার হাজার মানুষ গত বুধবার থেকে বিক্ষোভ করছে। মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের তথ্য অনুযায়ী বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলি ও সংঘর্ষে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ২৩৩ জন নিহত হয়েছে। এই সহিংসতা ও সরকারের দমন নীতির প্রতিবাদে চীন, যুক্তরাজ্য, ভারত, পোল্যান্ড, সুইডেন, আরব লীগ, বেলজিয়াম, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইন্দোনেশিয়া ও জাতিসংঘে নিযুক্ত লিবিয়ার উপরাষ্ট্রদূত এবং কয়েকটি দেশে লিবিয়ার দূতাবাসের বিভিন্ন পর্যায়ের কয়েকজন কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানানো হয়।

বরিশালের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী খাদ্যমূল্য যতই বাড়ুক সমস্যা নেই


                                     
স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল থেকে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খাদ্যের মূল্য যতই বাড়ুক তা নিয়ে সমস্যা নেই, দেশে খাদ্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি। এজন্য তিনি দক্ষিণাঞ্চলের প্রতিটি অনাবাদি জমিতে চাষাবাদ করার আহ্বান জানান। দেশের কৃষকরা এবার  ধান, পাটের ন্যায্য দাম পেয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। গতকাল বরিশালে আবদুর রব সেরনিয়াবাত সেতুসহ বেশ কয়েকটি উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধন শেষে এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে দেশের মানুষকে কিছু দিয়ে যায়।
দুপুর আড়াইটায় কীর্তনখোলা নদীর ওপর নির্মিত আবদুর রব সেরনিয়াবাত সেতুর উদ্বোধনের পর অনুষ্ঠিত জনসভায় সভাপতিত্ব করেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র শওকত হোসেন হিরণ। বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, যোগাযোগমন্ত্রী  সৈয়দ আবুল হোসেন, সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ, উপদেষ্টামণ্ডলীর সভাপতি তোফায়েল আহমেদ, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, এডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. শাজাহান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাসিম, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের সব উন্নয়ন আওয়ামী লীগ সরকারই করেছে। তার কাছে কোন দাবির প্রয়োজন নেই। একে একে সব উন্নয়নই সম্পন্ন করা হবে। তিনি কুয়াকাটাকে পর্যটন কেন্দ্র করে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরার অঙ্গীকার করেন। শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের স্বাধীনতা এনে দিতে পারলেও মানুষের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা দিতে পারেননি। তার আগেই তাকে জীবন দিতে হয়েছে। বর্তমান সরকার মানুষের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য প্রাণপণ কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে বলেন, এজন্য তাকে যদি তার পিতা, ভাইদের মতো জীবন দিতে হয় তাতেও আপত্তি নেই।
শেখ হাসিনা প্রায় ২৭ মিনিটের বক্তব্যে বরিশালের সেতু, আবদুর রব সেরনিয়াবাত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, শিক্ষা বোর্ডের নবনির্মিত ভবন এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধনের কথা উল্লেখ করে বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের কথা এ সরকার সব সময়ই ভাবে। তিনি বলেন, সমপ্রতি অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচনে ১৯টির মধ্যে ১৮টি পৌর চেয়ারম্যানের পদ আওয়ামী লীগকে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ উপহার দিয়েছে। এর যথাযথ সম্মান তিনি দেবেন বলে অঙ্গীকার করেন। আগামীতে বরিশালে একটি মেরিন একাডেমি, দু’টি স্কুলকে সরকারিকরণ, বরিশাল-পিরোজপুর সড়কের ওপর বেকুটিয়া সেতু, বরিশাল-পটুয়াখালী সড়কের লেবুখালী ব্রিজ নির্মাণ, ভোলায় একটি সার কারখানা নির্মাণসহ একাধিক অঙ্গীকার করেন। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় একটি পৃথক ভবনে হবে। এ বছরই কাজ শুরু এবং আগামী শিক্ষা বছর থেকে ক্লাস হবে বলে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দেন।  প্রধানমন্ত্রী দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে বই পৌঁছে দেয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, এতে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর হার কমেছে, ক্লাসে উপস্থিতি বেড়েছে শিক্ষার্থীদের। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল সোয়া ১১টায় বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন করেন। বেলা ১২টায় আবদুর রব সেরনিয়াবাত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের উদ্বোধন করেন। 

পঞ্চম পরমাণুশক্তিধর বৃটেনকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান


মানবজমিন ডেস্ক: পরমাণু অস্ত্রের সংখ্যার দিক থেকে পাকিস্তান বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম পরমাণু শক্তিধর দেশ হিসেবে পরিচিত বৃটেনকে অচিরেই ছাড়িয়ে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। বৃটেনের ডেইলি মেইল এক রিপোর্টে বলছে পাকিস্তান এমন একটি সময়ে সংখ্যার দিক থেকে বৃটেনকে টেক্কা দিতে যাচ্ছে যখন তারা নিজেরাই সন্ত্রাসীদের পক্ষ থেকে ভয়াবহ হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মনে করছে, গত দুই বছরে পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রের মজুদ প্রায় ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন সেখানে পরমাণু অস্ত্রের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গেছে। এর অর্থ হচ্ছে এ অঞ্চলের সবচেয়ে অস্থিতিশীল দেশ হিসেবে পরিচিত পাকিস্তান পরমাণু অস্ত্রের সংখ্যার দিক থেকে বৃটেন এবং এ অঞ্চলে তাদের প্রতিবেশী প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। পাকিস্তানে সমপ্রতি প্লুটোনিয়াম এবং উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ইউরেনিয়াম উৎপাদন বৃদ্ধির প্রেক্ষিতেই যুক্তরাষ্ট্র তাদের উপাত্ত বিশ্লেষণ করেছে। কিছু কিছু বিশেষজ্ঞ অবশ্য পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রের সংখ্যা ১১০টি হতে পারে বলেও পূর্বাভাস দিয়েছেন। পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে এসব অস্ত্র মজুদ রাখা হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করলেও অনেকে বলছেন প্রধান বিমান ঘাঁটির কাছেই সেগুলো রাখা হয়েছে। পাকিস্তানের কাছে এতো বিপুল পরিমাণে পরমাণু অস্ত্র থাকার বিষয়টি এখন সেখানকার ত্রাণ সহযোগিতার ওপর প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার বিষয়টি বিশেষভাবে প্রভাবিত করবে। এখন প্রশ্ন উঠছে, যেখানে বিপুল সংখ্যক জনতা দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করছেন সেখানে পরমাণু অস্ত্রের ব্যয় জারদারি প্রশাসন কিভাবে মেটাচ্ছেন। গত বছর পাকিস্তানের বন্যা দুর্গতদের সাহায্যের জন্য আন্তর্জাতিক ভাবে লাখ লাখ ডলার তোলা হয়েছে। পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র সন্ত্রাসীদের হাতে পড়তে পারে বলে যে আশঙ্কা করা হচ্ছে এক্ষেত্রে সেটা আরও ঘনীভূত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। পাকিস্তানের পরমাণু কর্মসূচির সঙ্গে সম্পৃক্ত বেশ কিছু বিজ্ঞানীরও আল-কায়েদার প্রতি দুর্বলতা রয়েছে বলে পশ্চিমা বিশ্ব উদ্বিগ্ন। এ ধরনের অভিযোগে পাকিস্তানের বেশ কয়েকজন বিজ্ঞানীকে এর আগে আটকও করা হয়েছিল।

বিমান থেকে জনতার ওপর বোমা


লিবিয়ায় বিক্ষোভ-সহিংসতা ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। দেশের পূর্বাঞ্চল সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারী ও বিদ্রোহী সেনাদের দখলে চলে গেছে। বিভিন্ন দেশে নিযুক্ত লিবিয়ার রাষ্ট্রদূতেরা বিক্ষোভকারীদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে পদত্যাগ করেছেন। এদিকে বিক্ষোভ দমনে ট্যাংক-যুদ্ধবিমানসহ সামরিক বহর মোতায়েন করেছেন দেশটির নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি। যুদ্ধবিমান থেকে বোমাও ফেলা হয়েছে বিক্ষোভকারীদের ওপর। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণে গাদ্দাফি বিক্ষোভকারীদের গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য নিজের সমর্থকদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন। খবর এএফপি, রয়টার্স, বিবিসির।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে আল-জাজিরা টেলিভিশন জানায়, গত সোমবার রাতে ও গতকাল সকালে রাজধানী ত্রিপোলি ও দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর বেনগাজিতে যুদ্ধবিমান থেকে বোমা ফেলা হয়। এ ছাড়া হেলিকপ্টার ও ট্যাংক থেকে গুলি ছোড়া হচ্ছে।
ত্রিপোলির বাসিন্দা আবদেল মোহাম্মদ সালেহ একটি বিদেশি টেলিভিশনকে বলেন, যা ঘটছে তা অকল্পনীয়। যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার থেকে একের পর এক বোমা ফেলা হচ্ছে। অনেক মানুষ মারা গেছে।
পূর্বাঞ্চলীয় শহর আল-বায়দার এক বাসিন্দা টেলিফোনে রয়টার্সকে জানান, সোমবার রাতে গাদ্দাফি-সমর্থকদের নির্বিচার গুলিতে তাঁর ভাইসহ ২৬ জন নিহত হয়। এ ছাড়া ট্যাংক ও যুদ্ধবিমান থেকে বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে।
ওই শহরের আরেক বাসিন্দা মাহরি বলেন, ‘চাই বা না চাই, আমাদের এখন মরতেই হবে। এটা পরিষ্কার যে, আমাদের মরা-বাঁচায় তাদের কিছু যায়-আসে না। এটা গণহত্যা।’ শুধু ত্রিপোলি, বেনগাজি, আল-বায়দা নয়, দেশজুড়ে বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলে পড়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও গাদ্দাফির সমর্থকেরা।
পূর্বাঞ্চলীয় তবরুক শহর থেকে রয়টার্সের এক সাংবাদিক জানান, ওই অঞ্চলের বেশির ভাগ এলাকা বিদ্রোহীদের দখলে চলে গেছে। সেখান থেকে সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর হ্যানি সাদ মারজা বলেন, ‘পুরো পূর্বাঞ্চল এখন গাদ্দাফির নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এখানে জনগণ ও সেনাবাহিনী হাতে হাত ধরে এগিয়ে যাচ্ছে।’
ফাসলুম জেলা থেকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার থেকে ‘ভাড়াটে খুনিদের’ নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তারা নির্বিচারে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি ছুড়ছে। তাজুরা জেলা থেকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সেখানেও বন্দুকধারীরা নির্বিচারে গুলি চালাচ্ছে।
ভারতে লিবিয়া দূতাবাস থেকে পদত্যাগকারী রাষ্ট্রদূত আল-এসাওয়ি জানান, বেসামরিক নাগরিকদের ওপর বোমা হামলা চালাতে সরকার যুদ্ধবিমান ব্যবহার করছে। এ ছাড়া বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলার জন্য সরকার বিদেশি নাগরিকদের ভাড়া করছে।
এর আগে জাতিসংঘে নিয়োজিত লিবিয়ার উপরাষ্ট্রদূত ইব্রাহিম দাব্বাসি জানান, গাদ্দাফি নিজের দেশের মানুষের বিরুদ্ধে গণহত্যা শুরু করেছেন।
তবে গাদ্দাফির ছেলে সাইফ আল ইসলামের দাবি, বিক্ষোভকারীদের ওপর নয়, বিদ্রোহী সেনাসদস্যদের লক্ষ্য করেই যুদ্ধবিমান থেকে বোমা ফেলা হয়েছে।
এদিকে, গতকাল স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন গাদ্দাফি। কোনো অবস্থাতেই পদত্যাগ করবেন না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা আমার দেশ। নিজের শেষ রক্তবিন্দু ঝরে পড়া না পর্যন্ত আমি লড়াই করে যাব। পিতৃপুরুষের এই মাটিতে আমি শহীদ হব।’
বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালাতে নিজের সমর্থকদের নির্দেশ দিয়ে গাদ্দাফি বলেন, ‘ওই ইঁদুরগুলোকে ধরে ফেল। রাস্তায় নেমে আস, তাদের যেখানে পাওয়া যায় সেখানেই গুঁড়িয়ে দাও।’
বিক্ষোভকারীরা ‘শয়তানের স্বার্থসিদ্ধির’ জন্যই কাজ করছে জানিয়ে গাদ্দাফি বলেন, যারা বিক্ষোভ করছে, তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে।
ত্রিপোলিসহ গোটা লিবিয়ার অবস্থা গতকাল ছিল থমথমে। ত্রিপোলিতে তেমন কোনো বড় বিক্ষোভ হয়নি। তবে রাজপথে ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে টহল দেয় পুলিশ ও সেনাবাহিনী। বেনগাজি পুরোপুরি বিদ্রোহীদের দখলে। সেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের পক্ষে যোগ দিয়েছেন।
ত্রিপোলির বাসিন্দা লিসা গোল্ডম্যান বলেন, ‘গাদ্দাফি যা খুশি তা-ই করতে পারেন, কোনো কিছুতেই তাঁর বাধে না। আমরা জানি, তিনি উন্মত্ত। তার পরও এটা খুবই দুঃখজনক যে, তিনি নিজের দেশের মানুষ মারছেন। নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের কচুকাটা করছেন।’
গাদ্দাফি দাবি করেছেন, বিক্ষোভের মুখে তিনি দেশ ছেড়ে যাননি, রাজধানী ত্রিপোলিতেই আছেন। গাদ্দাফির এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, তিনি (গাদ্দাফি) দেশ ছাড়বেন না এবং পদত্যাগও করবেন না। শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবেন। গত সোমবার বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলির ঘটনায় লিবিয়া সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।
গাদ্দাফির ৪১ বছরের শাসনের অবসান ঘটাতে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে তুমুল বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে লিবিয়ার মানুষ। এতে এ পর্যন্ত তিন শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে। এর মধ্যে সোমবার রাজধানী ত্রিপোলিতে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলিতে মারা যায় ৬০ জনের বেশি।
সোমবার রাত দুইটার দিকে হঠাৎ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেখা যায় গাদ্দাফিকে। একটি ভাঙাচোরা ভবনের পাশ থেকে তিনি গাড়িতে গিয়ে উঠছেন। এ সময় বৃষ্টি থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য মাথার ওপর একটি ছাতা ধরে আছেন। টেলিভিশন জানায়, গাদ্দাফিকে সরাসরি দেখানো হচ্ছে। এর আগে গুজব ছড়িয়ে পড়ে তিনি ভেনেজুয়েলায় পালিয়ে গেছেন।
টেলিভিশনে এক মিনিটের মতো কথা বলেন গাদ্দাফি। তিনি বলেন, ‘আমি গ্রিন স্কয়ারে তরুণদের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি।’ এই স্কয়ারটি ত্রিপোলির উপকণ্ঠেই অবস্থিত। সেখানে ওই দিন বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়।
গাদ্দাফি আরও বলেন, ‘এ কথা প্রমাণ করার জন্যই এসেছি যে আমি ত্রিপোলিতেই আছি, ভেনেজুয়েলায় নয়।’
গাদ্দাফির অন্যতম শীর্ষ সহযোগী নূরি আল-মিসমারি প্যারিসে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, গাদ্দাফি ক্ষমতা থেকে সরেও দাঁড়াবেন না, দেশও ছাড়বেন না। শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবেন।
এদিকে হাজার হাজার বিদেশি ত্রিপোলি ছাড়ার চেষ্টা করছে। দেশটির বিভিন্ন নির্মাণ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত হাজার হাজার চীনা নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে লিবিয়া সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে চীন।
তুরস্ক তাদের প্রায় তিন হাজার নাগরিককে সরিয়ে নিতে লিবিয়ার বন্দরনগর বেনগাজিতে তিনটি জাহাজ পাঠিয়েছে। ইতিমধ্যে বিমানে করে তারা প্রায় এক হাজার জনকে দেশে নিয়ে গেছে। গতকাল ফ্রান্স তার নাগরিকদের সরিয়ে নিতে একটি বিমান পাঠায়। কিন্তু সেটি ত্রিপোলিতে নামতে না পারায় মাল্টায় অবতরণ করে। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র তাদের নাগরিকদের সরিয়ে আনতে বিমান পাঠাচ্ছে।
লিবিয়ার সাবেক উপনিবেশিক শাসক ইতালি বিমানবাহিনীর তিনটি সি-১৩০ বিমান পাঠাচ্ছে। প্রায় দেড় হাজার ইতালীয় লিবিয়ায় আছে।
মিসরের সঙ্গে লিবিয়ার সীমান্ত এখন বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে। এর আগে ওই সীমান্ত থেকে সীমান্তরক্ষীদের প্রত্যাহার করে নেয় লিবিয়া।
লিবিয়ায় অবস্থানকারী মিসরীয়রা ইতিমধ্যে লিবিয়া ছাড়তে শুরু করেছে। মিসর জানিয়েছে, নাগরিকদের দেশে নিয়ে আসতে তারা কমপক্ষে চারটি বিমান পাঠাচ্ছে।
আল-জাজিরা টেলিভিশন জানায়, বিক্ষোভকারীদের ওপর শক্তি প্রয়োগের প্রতিবাদে পদত্যাগ করেছেন দেশটির বিচারমন্ত্রী মুস্তাফা আবদুল জলিল। তিনি বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ, ভারত, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়াসহ আরও কয়েকটি দেশ এবং জাতিসংঘ ও আরব লিগে নিযুক্ত লিবিয়ার কূটনীতিকেরা পদত্যাগ করে বিক্ষোভকারীদের পক্ষ নিয়েছেন।
গত সোমবার টেলিফোনে গাদ্দাফির সঙ্গে কথা বলেন জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন। এরপর তিনি জানান, লিবিয়া-পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য মঙ্গলবার নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। মুন বলেন, ‘আমি তাঁকে (গাদ্দাফি) বলেছি, সভা-সমাবেশ, বাকস্বাধীনতা এবং মানবাধিকার অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।’
জাতিসংঘের মানবাধিকারের প্রধান নাভি পিল্লাই বলেছেন, বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবেই গণ্য হবে।
লিবিয়া-পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল কায়রোতে জরুরি বৈঠকে বসেন আরব লিগের কূটনীতিকেরা। পরে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, লিবিয়ার সরকার বিক্ষোভকারীদের দাবি পূরণ না করা পর্যন্ত লিবিয়াকে সংস্থার বৈঠকে অংশ নিতে দেওয়া হবে না।
শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলির ঘটনায় লিবিয়া কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘লিবিয়া সরকারের উচিত দেশের মানুষের বাকস্বাধীনতা ও সভা-সমাবেশের অধিকারসহ সর্বজনীন অধিকারের প্রতি সম্মান জানানো। অন্যায় রক্তপাত এখনই বন্ধ করার সময়।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মন্ত্রীরা এক বিবৃতিতে বিক্ষোভকারীদের ওপর দমন-পীড়নের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।

সৌরঝড়ের কারণে পৃথিবীতে নেমে আসতে পারে মহাবিপর্যয়


বিজ্ঞানীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, সৌরঝড়ের প্রভাবে পৃথিবীর বুকে শিগগিরই এক বৈশ্বিক বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। তাঁদের আশঙ্কা, সৌরঝড়ের কারণে মহাকাশে স্থাপিত কৃত্রিম উপগ্রহ এবং বিশ্বজুড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ-ব্যবস্থাপনা বিকল হয়ে যেতে পারে। আসন্ন ওই মহাবিপর্যয়কে তাঁরা ‘গ্লোবাল ক্যাটরিনা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁরা বলেছেন, এতে সারা বিশ্বে অন্তত দুই ট্রিলিয়ন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হবে।
যুক্তরাজ্য সরকারের প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা জন বেডিংটন গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য অ্যাডভান্সমেন্ট অব সায়েন্সের (এএএএস) বার্ষিক সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে এ হুঁশিয়ারি দেন। পরে সংশ্লিষ্ট অন্য বিজ্ঞানীরা তাঁর বক্তব্যের সমর্থনে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
তাঁরা বলেছেন, সূর্যের অভ্যন্তরে চলমান অগ্নিঝড়ের দমকা পর্যায়ক্রমে বাড়তে ও কমতে থাকে। প্রতি ১১ বছরে একবার সৌরঝড়ের প্রচণ্ডতা সর্বোচ্চমাত্রায় ওঠে। তাঁরা বলেছেন, হিসাব অনুযায়ী ২০১৩ সালে সর্বোচ্চমাত্রার সৌরঝড় হওয়ার কথা।
একেকটি দমকার সঙ্গে প্রচণ্ড তাপবাহী সৌরশিখা সৌরজগতে ছড়িয়ে পড়ে। এই শিখার সঙ্গে বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় তেজস্ক্রিয়তার (ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন) আণবিক বিস্ফোরণ ঘটে। তেজস্ক্রিয় শিখা যখন পৃথিবীর দিকে আসতে থাকে, তখন বায়ুমণ্ডলের বাইরের পরিমণ্ডল বিদ্যুতায়িত হয়ে ওঠে। এতে ভূ-পৃষ্ঠে থাকা মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও মহাশূন্যে প্রতিস্থাপিত কৃত্রিম জিপিএস (গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম) ভূ-উপগ্রহ এবং অন্যান্য গবেষণা ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সমূহ আশঙ্কা থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডোতে অবস্থিত স্পেস ওয়েদার প্রেডিকশন সেন্টারের পরিচালক টমাস বগড্যান বলেছেন, জিপিএস আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে। এর সঙ্গে বিমান চলাচল, ইন্টারনেট সেবা, টেলিযোগাযোগ, বিদ্যুৎ সরবরাহ সবকিছু নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। ক্রেডিট কার্ড দিয়ে গাড়িতে এক গ্যালন তেল ভরতে গেলেও ইন্টারনেট যোগাযোগের দরকার। এ ব্যবস্থা বিগড়ে গেলে সারা পৃথিবীর যাবতীয় স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রপাতি বিকল হয়ে যাবে।
আরেকটি বিষয় হলো, সৌরঝড়ে সৃষ্ট প্রচণ্ড শক্তিশালী বিদ্যুৎতরঙ্গ পৃথিবীর ম্যাগনেটোস্ফেয়ারকে আঘাত করলে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বৈদ্যুতিক লাইন ও গ্যাসের পাইপলাইনেও সে তরঙ্গে স্পৃষ্ট হতে পারে। এর ফলে বিদ্যুৎব্যবস্থা অচল হয়ে গাঢ় অন্ধকারে ডুবে যেতে পারে পৃথিবী।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এ অবস্থা থেকে রেহাই পেতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সৌরঝড়ের তেজস্ক্রিয় প্রবাহ প্রতিরোধক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। গার্ডিয়ান অনলাইন।

নরসিংদীতে মসজিদ ও মাজার ভেঙে জমি দখল করেছে আ’লীগ নেতা

ভূঁইফোড় এক রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ নেতা সড়ক ও জনপথের জমি আর ব্রহ্মপুত্র নদ দখল করে নিয়েছে। শুধু তাই নয়, রাতের অন্ধকারে মসজিদ আর পুরনো মাজার গুঁড়িয়ে দিয়ে অপরাধের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। নরসিংদী সদর উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে ভগিরথপুরে প্রায় পনের কোটি টাকা মূল্যের এই জমি দখলকারী রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীর নাম আওলাদ হোসেন মঞ্জু।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ধর্ম ও সমাজকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মসজিদ ও মাজার ভাঙার এ নায়কের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে স্থানীয় জনগণ। এ অপকর্মে লিপ্ত থাকার অভিযোগে তার দাঙ্গাবাহিনী প্রধান নাছিরকে পুলিশ গ্রেফতারও করেছে। কিন্তু পরে তার অপরাধের মাত্রা আরও বেড়ে গেছে।
দিনরাত তার পালিত বাহিনীর সদস্যরা চারদিক ঘিরে রেখেছে গোটা এলাকা। পুলিশও পিছু হটেছে। তবে পুলিশের দাবি, কেউ মামলা না করায় তারা কোনো অ্যাকশনে যেতে পারছে না। এদিকে জনগণ ভয়ে মামলা না করলেও সড়ক ও জনপথ এবং নদী দখলের কারণে স্থানীয় এসি ল্যান্ড অফিস থেকেও কেন মামলা করা হয়নি, এর কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি সংশ্লিষ্ট দুটি দফতর থেকে। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাবিবুর রহমান হাবিবের কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে মুখ না খুললেও পরে সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের সঙ্গে ঘটনাস্থল সরেজমিন পরিদর্শন করেন। ফোনে ডেকে নিয়ে আসেন অভিযুক্ত আওলাদ হোসেনকে। নদী দখল করার কারণে তাকে স্টুপিড বলে গালিও দেন।
পরে এসি ল্যান্ড নদীতে ভরাটকৃত মাটি অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার জন্য নির্দেশ দিলেও এক মুঠো মাটিও সরাতে দেখা যায়নি।
এদিকে মসজিদ ও মাজার ভাঙার ব্যাপারে অভিযুক্তের ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা তা জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক অমৃত বাড়ৈ জানান, ধর্ম ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নিয়ে টানা-হ্যাচরা করা খুব সেনসেটিভ ব্যাপার। এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে আদালতে মামলা করার জন্য পরামর্শ দেন জেলা প্রশাসক। তবে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করে কেন প্রতিকার পাওয়া গেল না, এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি পুলিশকে ঘটনাটি দেখার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আওলাদ হোসেন অন্যায়ভাবে কোনো কিছুই করছেন না দাবি করলেও মসজিদ আর মাজার ভাঙার কথা স্বীকার করেন তিনি। এ এলাকার অনেক মসজিদ-মাদ্রাসা তার টাকায় চলে দম্ভোক্তি করে তিনি আরও বলেন, এই অল্প কিছুদিনের মধ্যে এক কোটি টাকা দান করব কিন্তু লোক পাচ্ছি না। আপনারাই সেই লোক কিনা অন্যের জায়গা দখল করছে।
এদিকে অভিযুক্তের আপন বড় ভাই রতন মিয়া ও স্থানীয় বাসিন্দা শিল্পপতি সাজন ভূঞা জানান, যে মাজারটি রাতের অন্ধকারে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে তার নাম কালু শাহর মাজার। মুরব্বীদের কাছে শুনেছেন, এ মাজারের বয়স আনুমানিক তিনশত বছর। এ মাজার ভাঙায় তার বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছেন এখানকার কয়েক হাজার মানুষ। এ মাজার ভাঙার কারণে যে কোনো সময় আইন শৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে বলেও তারা দাবি করেন।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার লোকজন জমায়েত হয়েছে। খবর পাওয়া মাত্রই দ্রুুত ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চলছে। তবে পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, জন বিস্ফোরণ পুলিশের পক্ষে ম্যানেজ করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।

জাতির উদ্দেশে ভাষণে গাদ্দাফি : আমি বেদুঈন যোদ্ধা : শহীদ হতে জানি : বাংলাদেশী জিম্মি নেই : দীপু মনি


লিবিয়া পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করছে। প্রেসিডেন্ট মোয়াম্মার আল গাদ্দাফি জাতির উদ্দেশে ভাষণে ক্ষমতা ছাড়বেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি হুশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, জনতা শান্ত না হলে বলপ্রয়োগে বাধ্য হবেন। কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শী ও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা গেছে, জনতার ওপর বিমান ও হেলিকপ্টার গানশিপ থেকে হামলা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে তিন শতাধিক লোক নিহত হয়েছে বলে সংবাদপত্রের খবরে বলা হয়েছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ জরুরি বৈঠকে বসছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন অসহায় জনসাধারণের ওপর হামলা বন্ধ করতে লিবিয়া কর্তৃৃৃৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। বিরোধীদলের প্রতি এই দমন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় বইছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত ও মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত লিবিয়ার রাষ্ট্রদূতরা এর প্রতিবাদে পদত্যাগ করেছেন। রয়টার্স, আল জাজিরা, এএফপি, বিবিসি
এদিকে
লিবিয়ায় শতাধিক বাংলাদেশীকে জিম্মি করা হয়েছে বলে প্রকাশিত খবর সঠিক নয় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. দীপু মনি। লিবিয়া থেকে বাংলাদেশীদের ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা চলছে বলেও তিনি জানান।
ওদিকে লাগাতার অশান্তির ফলে লিবিয়ায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। রাজধানী ত্রিপলিতেও খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে। দলে দলে সরকারি কর্মকর্তারা পদত্যাগ করছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যেই বিমান ও হেলিকপ্টার থেকে বোমা ও রকেট হামলার খবর দিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা। প্রেসিডেন্ট গাদ্দাফির ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার লক্ষ্যে তার অনুগত সৈন্যরা সাধারণ জনতার ওপর হামলা অব্যাহত রেখেছে। লিবিয়া সঙ্কটের এখনও কোনো সমাধানসূত্র দেখা যাচ্ছে না। সরকার ও বিরোধীপক্ষ নিজেদের অবস্থানে অটল রয়েছে।
গাদ্দাফি দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন বলে যে গুজব উঠেছিল তা মিথ্যা প্রমাণিত করে গাদ্দাফি গতকাল টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। তিনি বলেন, ধিক তাদেরকে যারা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে নৈরাজ্য সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। আমি বেদুঈন যোদ্ধা। লিবিয়ার গৌরব আমার হাতে অর্জিত হয়েছে। আমি শহীদ হয়ে মরব তবুও দুষ্কৃতকারীদের সুযোগ দেব না। তারা বিশেষ একটি গোষ্ঠী শয়তানের সহায়তায় লিবিয়ায় অশান্তি সৃষ্টির প্রয়াস পাচ্ছে। তিনি বলেন, এখনও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে বল প্রয়োগ করা হয়নি। ওরা শান্ত না হলে শক্তি প্রয়োগ করা হবে বলে তিনি হুশিয়ার করে দেন।
গাদ্দাফি তার অনুগত জনসাধারণের প্রতি এই বিশৃঙ্খলার প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় বেরিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
বিভিন্ন দেশে কর্মরত লিবিয়ার কূটনীতিকরা পদত্যাগ করতে শুরু করেছেন। সেনাবাহিনীতেও বিভক্তির খবর পাওয়া গেছে। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম লিবিয়া থেকে স্বাধীনভাবে সংবাদ পরিবেশন করতে না পারায় সেখানকার সঠিক চিত্র তুলে ধরা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিমানবাহিনী বিক্ষোভকারীদের ওপর বোমা হামলা হয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। এদিকে নিরাপত্তা বাহিনীর একাংশ বেঁকে বসায় আফ্রিকার অন্যান্য দেশ থেকে ভাড়াটে সৈন্য এনে তাদের দিয়ে দমন নিপীড়ন চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগও উঠছে। সরকারিভাবে অবশ্য বিক্ষোভকারীদের হত্যালীলার অভিযোগ অস্বীকার করছে। এদিকে লাগাতার অশান্তির ফলে দেশের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এমনকি রাজধানী ত্রিপলিতেও খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
এদিকে লিবিয়া পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ জরুরি বৈঠকে বসেছে।
লিবিয়ায় কোনো বাংলাদেশী জিম্মি অবস্থায় নেই : আমাদের কূটনৈতিক রিপোর্টার জানান, লিবিয়ায় কোনো বাংলাদেশী জিম্মি বা আটক অবস্থায় নেই। লিবিয়া থেকে বাংলাদেশীদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। এজন্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে এরই মধ্যে যোগাযোগ করা হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং পররাষ্ট্র সচিব এই তথ্য জানান।
গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে নবনির্বাচিত ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেট অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিকাব) নির্বাহী কমিটির নেতা ও সদস্যদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের সময়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, লিবিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশীদের ফিরিয়ে আনার জন্য ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। দূতাবাসের মাধ্যমে সেখানকার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। পরে বিকালে মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল কায়েস বলেন, লিবিয়ায় কোনো বাংলাদেশী আটক বা জিম্মি অবস্থায় নেই। লিবিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এটা নিশ্চিত করেছেন। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, লিবিয়ায় সার্বিক পরিস্থিতি এবং বাংলাদেশীদের অবস্থা নিয়ে রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে।
লিবিয়া থেকে বাংলাদেশীদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এ ব্যাপারে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। লিবিয়ায় এখন ঘোলাটে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি অনুকূল হলে বাংলাদেশীদের সরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করা হবে। তিনি বলেন, লিবিয়া থেকে বাংলাদেশীদের তৃতীয় কোনো দেশে নয়, বাংলাদেশেই ফিরিয়ে আনা হবে। তবে পররাষ্ট্র সচিব স্বীকার করেন, অন্য বিদেশীদের সঙ্গে বাংলাদেশীরাও আক্রমণের শিকার হয়েছেন। বাংলাদেশে নিযুক্ত লিবিয়ার রাষ্ট্রদূত এইচএল আলী ইমাম গাদ্দাফীর পক্ষ ত্যাগ করে পদত্যাগ করেছেন। তার এই সিদ্ধান্তের কথা রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছেন বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব।

নিউজিল্যান্ডে ভূমিকম্প, নিহত ৬৫


নিউজিল্যান্ডের সাউথ আইল্যান্ডে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী ক্রাইস্টচার্চে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে। নিহত হয়েছে কমপক্ষে ৬৫ জন নারী-পুরুষ-শিশু। সোমবার স্থানীয় সময় বেলা ১২-৫১ মিনিটে প্রবল কম্পনে কয়েক মুহূর্তে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় নগরীর বিশাল এলাকা। 'ক্রাইস্টচার্চ নগরীর মাত্র দশ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে ভূ-গর্ভের পাঁচ কিলোমিটার নিচে এই ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়। প্রধানমন্ত্রী জন কি এই দুর্যোগে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের কথা জানিয়ে সারাদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। দমকল বাহিনী জানিয়েছে, দালানকোঠা ও উঁচু ভবনের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে বহু নর-নারী ও শিশু আটকা পড়ে রয়েছে। সরকারি ঘোষণায় গত সেপ্টেম্বর-পরবতর্ী ৭ দশমিক ১ মাত্রার প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্পের চাইতেও সোমবারের ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা ব্যাপক ও মারাত্মক বলে জানানো হয়েছে। ঐ সময় প্রবল কম্পনে কেউ নিহত হয়নি। যদিও সম্পদের ক্ষতি হয়েছিল তিনশ' কোটি ডলারের। তখন ক্রাইস্টচার্চ নগরী থেকে উৎপত্তিস্থল ছিল আরো দূরে এবং ভূ-গর্ভের আরো নিচে।

মাত্র পাঁচ মাসের ব্যবধানে শহরটিতে দ্বিতীয় দফা ভূমিকম্পের পর টেলিভিশন সম্প্রচারে দেখা যায়, বিধ্বস্ত বিল্ডিংয়ের ভেতর থেকে মানুষজনকে বের করে আনা হচ্ছে। পুলিশ ভূমিকম্পে অনেক হতাহতের আশঙ্কা করছে। ভূমিকম্পের পরপরই বন্ধ করে দেয়া হয় বিমানবন্দর, বিচ্ছিন্ন রয়েছে বিদু্যৎ সরবরাহ ও টেলিযোগাযোগ। নগরীর রাজপথ ধ্বংসস্তূপে ছেয়ে যায়। উঁচু ভবনের ধ্বংসস্তূপ রাজপথে এসে পড়লে চাপা পড়ে যানবাহন। বিভিন্নস্থানে ভূমিকম্পের সাথে অগি্নকাণ্ড শুরু হয়। একটি বৃহৎ ধ্বংসস্তূপের নিচেই অন্তত ত্রিশজন আটকা পড়েছে বলে জানা গেছে। নগরীর কেন্দ্রে বহু ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করার দৃশ্য টেলিভিশনে দেখানো হচ্ছিল। নগরীর কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত পাথরে নির্মিত ক্রাইস্টচার্চ ক্যাথেড্রালের আংশিক ধ্বংস সাধিত হয়েছে। এর কয়েকটি স্তম্ভ ও খিলান ভেঙ্গে পড়ে। রয়টার্স ও বিবিসি জানায়, উদ্ধার তৎপরতায় সেনাবাহিনী নিয়োগ করা হয়েছে। রাজপথে ঠাঁই নিয়েছে বহু মানুষ। নগরীর মেয়র বলেছেন, চার লাখ মানুষের বসতি এই নগরী যুদ্ধবিধ্বস্ত নগরীতে পরিণত হয়েছে। বিদু্যৎ ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি পানি সরবরাহের প্রধান সব পাইপলাইন ফেটে গিয়ে রাজপথে বন্যার সৃষ্টি হয়। আহতদের হাসপাতালে নেয়ার ক্ষেত্রে অ্যাম্বুলেন্স সঙ্কট দেখা দেয়।

Tuesday, February 22, 2011

নিজস্ব টিভির জন্য অর্ধকোটি টাকা চেয়েছে সংসদ


শরীফ খিয়াম, ২৩ ফেব্রুয়ারি (শীর্ষ নিউজ ডটকম): সম্প্রতি পরীক্ষামূলকভাবে সম্প্রচারে যাওয়া জাতীয় সংসদের নিজস্ব টেলিভিশন চ্যানেল সংসদ বাংলাদেশের জন্য সরকারের কাছে অর্ধকোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত সংসদ টেলিভিশনের সম্প্রচার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে ওই টাকা চাওয়া হয়। সংসদ সচিবালয়ের নির্ভরযোগ্য সূত্র এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
সূত্র জানিয়েছে, অর্থ মন্ত্রণালয় এই টাকা ছাড় দিলে স্পিকারের অনুমতিসাপেক্ষে পিপিআর অনুযায়ী দরপত্র আহ্বান করে টেলিভিশনটির জন্য বিভিন্ন সরঞ্জাম ক্রয় ও অনুষ্ঠান নির্মাণ করা হবে। বর্তমানে টেলিভিশনটি বাংলাদেশ টেলিভিশনের ধারণকৃত অনুষ্ঠান সম্প্রচার করায় কোনো ব্যয় হচ্ছে না। জানা গেছে, সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্য গাড়ি ভাড়া, ক্যাসেট, ডিভিডি, আসবাবপত্র যেমন-আলমারি, টেবিল, সোফা, চেয়ার, এসি, লাইটিং, পর্দা ক্রয়, বহির্দৃশ্য ধারণ, আলোচনা অনুষ্ঠান, গান পরিবেশনা, আপ্যায়ন, প্রিভিউকমিটির বৈঠকের জন্য সম্মানী ও অন্যান্য বাবদ সম্ভাব্য ব্যয় হিসেবে অর্ধকোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়। সূত্র আরো জানায়, সংসদ টেলিভিশনটি জুন পর্যন্ত পরিচালনার জন্য সবচেয়ে বেশি ব্যয় ধরা হয়েছে আলোচনা অনুষ্ঠান বা টক শোর জন্য। ৫০টি অনুষ্ঠানের জন্য প্রতিটি ৫০ হাজার টাকা ব্যয় হিসেবে সর্বমোট ২৫ লাখ টাকা ব্যয় হবে। আসবাবপত্র বাবদ সাড়ে ৭ লাখ টাকা খরচ চাওয়া হয়েছে। প্রিভিউ কমিটির সদস্যদের সম্মানী ও বৈঠক বাবদ সাত সদস্যের কমিটির ৩০টি বৈঠকের (প্রতিমাসে ৬টি করে) জন্য ৩ লাখ ১৫ হাজার টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। ওই কমিটিতে সংসদ সচিবালয়ের পক্ষে ৬ জন ও বিটিভির পক্ষে একজন সদস্য থাকবেন। প্রতিটি বৈঠকে জনপ্রতি খরচ দেখানো হয়েছে দেড় হাজার টাকা। সে হিসাবে প্রতিটি বৈঠকে ব্যয় হবে ১০ হাজার ৫শ টাকা।
অন্যদিকে, প্রতিটি গানের জন্য শিল্পী সম্মানী, নির্দেশনা, ক্যামেরাম্যান, পিয়ন ও সেট নির্মাণ বাবদ ৪ হাজার টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এ বছরের জুন পর্যন্ত ৫০টি গানের জন্য মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ টাকা। ১শ ৮৪ মিনিটের ৫০টি ডিভিডির জন্য ১ লাখ ৩০ হাজার, ১শ ৮০ মিনিটের ১শটি ডিভিডির (দর্শন/প্রক্ষেপণ) দাম বাবদ ধরা হয়েছে ৫ হাজার টাকা। ৯৪ মিনিটের ৫০টি ক্যাসেটের (বহির্দৃশ্য ধারণ) দাম ধরা হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। এছাড়া প্রতিদিন সংসদ অধিবেশনসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান ধারণ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ক্যাসেটের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। গাড়ি ভাড়া বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ টাকা। এছাড়া আপ্যায়ন ভাতা হিসেবে ২ লাখ এবং অন্যান্য মোট ১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এসব মিলিয়েই মোট সম্ভাব্য ব্যয় ধরে অর্ধকোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে সংসদ সচিবালয়।
(শীর্ষ নিউজ ডটকম/ এসকে/ এনএম/ ০০.১০ ঘ.)

Monday, February 21, 2011

লিবিয়ায় বাংলাদেশিসহ তিনশতাধিক বিদেশি নাগরিক জিম্মি



ঢাকা, ২১ ফেব্রুয়ারি (শীর্ষ নিউজ ডটকম): লিবিয়ায় চলমান সরকার বিরোধী গণ আন্দোলনে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে দেশটিতে কর্মরত বাংলাদেশিরা। বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশিসহ সেখানে কর্মরত তিনশতাধিক বিদেশি নাগরিককে ৩ দিন ধরে জিম্মি করে রেখেছে। এদের মধ্যে ৯০-১০০ জনের মতো বাংলাদেশি। বাকীরা শ্রীলংকা ও নেপালের নাগরিক বলে জানা গেছে। শীর্ষ নিউজ ডটকমকে বিদেশি নাগরিকদের জিম্মি করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেশটিতে কর্মরত বাংলাদেশি ও তাদের স্বজনরা।
গত কয়েকদিন ধরে লিবিয়ায় ব্যপক বিক্ষোভ চলছে। বন্দর নগরী বেনগাজি, আল-বাইদা ও আজদাবিয়ায়সহ বিভিন্ন শহরের পর চলমান এ বিক্ষোভের ঢেউ এসে লাগে রাজধানী ত্রিপলীতেও। বিক্ষোভের মুখে দেশটিতে বসবাসরত বিদেশি নাগরিকরা পড়েন চরম দুর্ভোগে। দেশটির রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরে কর্মরত বাংলাদেশি নাগরিকরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন নিজেদের ঘরের মধ্যে। দেশটিতে কর্মরত ক'জনের পরিবারের সদস্যরা তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন শীর্ষ নিউজ ডটকমকে। 
বেনগাজি থেকে সাড়ে তিন'শ কিলোমিটার পূর্বে সীমান্ত শহর দ্বারনা সিটিতে কর্মরত মানিকগঞ্জের বাসিন্দা শফিউদ্দিন বিশ্বাস টেলিফোনে তার স্বজনদের জানিয়েছেন, তিন দিন ধরে তারা প্রায় তিনশ কর্মরত বিদেশি নাগরিক জিম্মি অবস্থায় রয়েছেন। এদের মধ্যে ৯০-১০০ জনের মতো বাংলাদেশি। বাকীরা শ্রীলংকা ও নেপালের নাগরিক। প্রথমদিকে তাদের খাবার সরবরাহ করা হলেও গত দুইদিন ধরে তাদের কোনো প্রকার খাবার দেয়া হচ্ছে না। লিবিয়ায় জিম্মি শফিউদ্দিনের ভাই সরকারি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কর্মচারী জিন্নাত আলী বিশ্বাস শীর্ষ নিউজ ডটকমকে এসব কথা জানান।
রংপুরের বাসিন্দা রকিবুল হাসান দীর্ঘদিন ধরে লিবিয়ায় কর্মরত আছেন। লিবিয়ার চলমান বিক্ষোভের পর থেকে তার পরিবারের সদস্যরা টেলিফোনে যোগগোগ স্থাপনের চেষ্টা করেও তা পারেননি। 
আমাদের নোয়াখালী প্রতিনিধি জানান, সোমবার দুপুরে লিবিয়ার বন্দর নগরী বেনগাজিতে একটি কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কর্মরত নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার মীরওয়ারিশপুর গ্রামের আমিন উল্যাহর পুত্র শিপন মোবাইলে শীর্ষ নিউজ ডটকমকে বলেন, পুরো লিবিয়া জুড়েই সহিংস ঘটনার খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে তিনি বাসা থেকে বের হতে না পারায় বিস্তারিত বলতে পারছেন না। তিনি বলেন, সরকার বিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লে তাদের আরো দুভর্োগ বাড়বে। বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথেও তারা যোগাযোগ করতে পারছেন না বলেও তিনি জানান।
এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার উইংয়ের মহাপরিচালক লায়লা বেগম শীর্ষ নিউজ ডটকমকে জানান, লিবিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবিএম নুরুজ্জামানের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, সেখানে বসবাসরত কোন বাংলাদেশি জিম্মি করা হয়নি। লিবিয়ার সংহিস ঘটনায় এ পর্যন্ত কোন বাংলাদেশি নাগরিক হতাহত হননি। বাংলাদেশি নাগরিকদের স্বজনদের আতংকিত না হওয়ার পরার্মশ দেন তিনি।

সেগুনবাগিচা থেকে আ’লীগ এমপির মেয়ে অপহরণ


কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি আফজাল হোসেনের মেয়ে রাজধানীর সেগুনবাগিচা থেকে অপহৃত হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। অপহৃত জোবাইদা আক্তার তুষা (১৬) খিলগাঁও হাইস্কুল থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। এ ঘটনায় এমপি নিজে বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় একটি অপহরণ মামলা করেছেন। মামলায় বলা হয়, শনিবার রাতে সেগুনবাগিচার বাসার সামনে থেকে তার কিশোরী মেয়েকে দুষ্কৃতকারীরা অপহরণ করে নিয়ে গেছে। পুলিশ গতকাল পর্যন্ত তুষাকে উদ্ধার বা কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। তবে পুলিশ বলেছে, এটি অপহরণ নাকি প্রেমঘটিত ঘটনা তা তদন্তের পর জানা যাবে। 
শাহবাগ থানায় করা মামলার অভিযোগে বলা হয়, রাত ৯টার দিকে ৬/৪, সেগুনবাগিচার হাসিনূর কটেজের সামনে থেকে হৃদয় (২৪) নামে এক যুবক সহযোগীদের নিয়ে তুষাকে অপহরণ করে। অপহরণকারীরা একটি প্রাইভেটকারে তুলে তাকে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে শাহবাগ থানার ওসি রেজাউল করিম জানান, একজন এমপির মেয়ে অপহরণ হয়েছে। তাকে উদ্ধারে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে। শনিবার রাতেই এমপি বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় হৃদয়, জাকির (৫৫), তার গাড়িচালক মনির (৩০) এবং হৃদয়ের মাকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। পুলিশ তাদের গ্রেফতারে চেষ্টা চালাচ্ছে। 
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাব-ইন্সপেক্টর মোক্তার হোসেন জানান, ওই ঘটনায় পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাচ্ছি। ভবনের নিরাপত্তাকর্মী পুলিশকে জানিয়েছে, তুষা ফোনে কথা বলতে বলতে মূল ফটক দিয়ে বের হয়ে যায়। অন্যদিকে তুষার মা-বাবা পুলিশকে জানায়, তার কাছে কোনো মোবাইল ফোন ছিল না। তিনি বলেন, ঘটনাটি রহস্যজনক বলে মনে হচ্ছে। আসামিদের গ্রেফতার ও মেয়েটিকে উদ্ধারের পর প্রকৃত ঘটনা নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানান তিনি। 
প্রসঙ্গত, এর আগে ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবসে একই কটেজ থেকে বের হয়ে আর বাসায় ফিরে আসেনি কিশোরী আয়েশা চৌধুরী টুম্পা। টুম্পা সেগুনবাগিচা বেগম রহিমা আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল। পরে ১৬ ফেব্রুয়ারি সকালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় রসুলবাগ বটতলা লোহার ব্রিজের নিচ থেকে টুম্পার লাশ উদ্ধার করা হয়।

আজ অমর একুশে : আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস



আবার এসেছে ফিরে একুশে ফেব্রুয়ারি। একুশ মানে মাথানত না করা। অধিকার আদায়ে আপসহীনভাবে এগিয়ে যাওয়া। ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি...।’ হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া এ গানের করুণ সুরে আজ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার অভিমুখে যাবে লাখো মানুষের প্রভাতফেরির মিছিল। অমর একুশের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে দিনের প্রথম প্রহর রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে ফুল নিয়ে অগণিত মিছিল যাওয়া শুরু হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। 
আজ অমর একুশে। মহান শহীদ দিবস। শুধু বাংলাদেশে শহীদ দিবস নয়, একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে বিশ্বের ১৮৮টি দেশে। আজ থেকে ৫৯ বছর আগে বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ঢাকার রাজপথ রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল। বরকত, রফিক, সালাম, জব্বারসহ নাম না জানা বেশ ক’জন শহীদের তাজা রক্তের বিনিময়ে রাষ্ট্রভাষা বাংলার আন্দোলন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছিল; যার চূড়ান্ত রূপ হিসেবে বাংলা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা লাভ করে। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন তাই এদেশের রক্তঝরা প্রথম গণতান্ত্রিক আন্দোলন। এজন্য প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। 
একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের জাতীয় জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। এ দিনটি একদিকে শোকাবহ, অন্যদিকে গৌরবোজ্জ্বল। বায়ান্ন সালের ভাষা আন্দোলন শুধু এদেশের রাজনীতির ক্ষেত্রে নয়, শিল্প-সংস্কৃতির ক্ষেত্রেও নতুন চেতনা-প্রবাহ সৃষ্টি করেছিল। এই চেতনা ছিল অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক এবং ন্যায়বিচারের মূল্যবোধসঞ্জাত। এজন্যই ১৯৭৬ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান প্রথম একুশে পদক প্রবর্তন করেন। চার ক্যাটাগরিতে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, ড. কুদরাত-এ-খুদা, কবি জসীমউদ্দীন, কবি সুফিয়া কামাল, কবি আবদুল কাদির, অধ্যাপক মো. মনসুর উদ্দিন, সাংবাদিক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া, আবুল কালাম শামসুদ্দীন ও আবদুস সালাম প্রথম এ সম্মাননা পান। 
আজ অমর একুশে উপলক্ষে দেশের সব রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন, পুষ্পস্তবক অর্পণ, আজিমপুরে ভাষা শহীদদের কবর জিয়ারত, আলোচনা সভা, একুশের কবিতা পাঠের আসর এবং ভাষাসৈনিকদের অংশগ্রহণে একুশের স্মৃতিচারণ। দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় শহীদ মিনার ঘিরে একই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। কারণ, শহীদ মিনার মা ও সন্তানের প্রতীকস্তম্ভ।
মহান একুশে উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ জিল্লুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বাণী দিয়েছেন। সংবাদপত্রগুলো আজ এ উপলক্ষে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। এসব ক্রোড়পত্রে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের প্রবন্ধ-নিবন্ধ ও কবিতায় একুশে ফেব্রুয়ারিকে নতুন প্রেক্ষাপটে মূল্যায়ন করা হয়। রেডিও-টেলিভিশন ও বেসরকারি চ্যানেলগুলো শহীদ দিবস উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করছে। অমর একুশে উপলক্ষে বাংলা একাডেমীর বইমেলা চলছে। একুশের সংকলন প্রকাশ এ দিবসটির একটি উল্লেখযোগ্য দিক। সারাদেশেই সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে এ সংকলন প্রকাশ করা হয়ে থাকে। 
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী : মহান ভাষা শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে দেয়া বাণীতে রাষ্ট্রপতি মোঃ জিল্লুর রহমান ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের শহীদদের অম্লান স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন। 
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, অমর একুশে আমাদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, বাঙালি জাতীয়তাবাদ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতীক। 
বিরোধীদলীয় নেত্রীর বাণী : বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া এক বাণীতে ভাষা শহীদদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের জাতীয় জীবনে এক তাত্পর্যময় দিন। দেশ স্বাধীন হলেও নতুন করে ভিন্নমাত্রায় আধিপত্যবাদী শক্তি এদেশের ওপর সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক আধিপত্য কায়েম করতে চাচ্ছে। একুশের অম্লান চেতনায় সব ষড়যন্ত্রকারী, আন্তর্জাতিক আধিপত্য শক্তিকে রুখতে দেশবাসীকে উদ্বুদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আওয়ামী লীগ : সকাল সাড়ে ৬টায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ভবনসহ সংগঠনের সব শাখা কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন এবং সকাল সাড়ে ৭টায় নিউমার্কেটের দক্ষিণ গেট থেকে নগ্নপায়ে কালোব্যাজ ধারণ করে প্রভাতফেরিসহ আজিমপুর কবরস্থানে ভাষা শহীদদের কবর জিয়ারত, পুষ্পমাল্য অর্পণ ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন। আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোও একই ধরনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
বিএনপি : ভোরে দলীয় কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন এবং দলীয় ও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ। ভোর ৬টায় বলাকা সিনেমা হলের সামনে থেকে কালোব্যাজ ধারণ ও প্রভাতফেরিসহ আজিমপুর কবরস্থানে ভাষা শহীদদের কবর জিয়ারত, পুষ্পমাল্য অর্পণ ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন। এছাড়া বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে দেশব্যাপী জেলা ও থানা পর্যায়ে এ উপলক্ষে প্রভাতফেরি, শহীদ মিনারে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

সাঈদীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ মেলেনি : ১৫ মার্চ পর্যন্ত শুনানি মুলতবি



জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে আটকের ৮ মাস পরও তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের তথ্য-প্রমাণ আদালতে উপস্থাপন করতে পারেনি সরকার। চূড়ান্তভাবে আদালতের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যেও তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়ে সরকার আবারও সময়ের আবেদন করেছে। একই আবেদনে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না করা পর্যন্ত মাওলানা সাঈদীকে আটক রাখার জন্য প্রার্থনা জানানো হয়েছে। এ আবেদনে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে আদালত সরকারপক্ষের আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, শুরু থেকেই আপনাদের মুখে একই কথা শুনছি। আগের আবেদনে বলেছেন ‘সাঈদীর বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের ব্যাপারে তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে’। আজকের আবেদনেও একই বক্তব্য উল্লেখ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে যে আবেদন করবেন হয়তো সেখানেও একই বক্তব্যই উল্লেখ করা হবে। আদালত সরকারপক্ষের আইনজীবীদের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, কোনো অভিযোগ ছাড়াই বিনা কারণে একটি লোককে কতদিন আটক রাখা যায়? আদালতেরও স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে। এ মন্তব্য করে আদালত ১৫ মার্চ পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। ওইদিন মাওলানা সাঈদীকে আদালতে হাজির করার জন্য নির্দেশ দেন আদালত। এই সঙ্গে আদালত ওই সময়ের মধ্যে মামলার সব নথিপত্র আদালতে দাখিল করার জন্য সরকারপক্ষের আইনজীবীদের নির্দেশ দেন। 
এদিকে তদন্ত কাজে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ এনে পিরোজপুরের জিয়ানগর থানায় মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে দায়ের করা ৬টি সাধারণ ডায়েরি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে বলে আদালতে তথ্য উপস্থাপন করেন মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম। আদালতের অনুমতি নিয়ে তিনি বলেন, গত বছর জুন মাসে মাওলানা সাঈদীকে কোনো কারণ ছাড়াই আটক করে কারাগারে অন্তরীণ করে রাখা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে সরকার তাকে আটক রাখার জন্য এই ট্রাইব্যুনালে আবেদন করে। বহু তদন্ত ও অনুসন্ধান করেও তার বিরুদ্ধে মানবতা কিংবা যুদ্ধাপরাধ তো দূরের কথা, কোনো ধরনের অপরাধেরই বিন্দুমাত্র উপাদান খুঁজে পায়নি সরকার। ফলে সরকার এখন সময় নিয়ে মিথ্যা সাক্ষ্য-প্রমাণ দাঁড় করানোর চেষ্টা করবে। সরকারপক্ষের এ আবেদনের ওপর আদালত মাওলানা সাঈদীর উপস্থিতিতে ২০ ফেব্রুয়ারি শুনানির তারিখ ধার্য করেন। আদালতের পূর্বনির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী গতকাল বেলা পৌনে ১১টায় কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কড়া পুলিশি পাহারায় তাকে আদালতে হাজির করা হয়। বেলা ১১টার দিকে বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমের নেতৃত্বে পুরাতন হাইকোর্ট ভবনে স্থাপিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হয়। 
চিকিত্সা ও জামিনের আবেদন : অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বিভিন্ন দেশের ট্রাইব্যুনালের রেফারেন্স উল্লেখ করে বলেন, আন্তর্জাতিক আইন ও রীতি অনুযায়ী বিচার শুরুর আগে আসামিকে জামিন দেয়ার বিধান রয়েছে। যেহেতু সরকার কয়েক দফায় সময় নিয়েও তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উপস্থাপন করতে পারেনি, কাজেই সঙ্গত কারণেই আদালত তার জামিন মঞ্জুর করবেন। আমরা যে কোনো শর্তে জামিনের প্রার্থনা জানাচ্ছি। তিনি বলেন, মাওলানা সাঈদী একজন ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব। সারা দেশে তার লাখ লাখ ভক্ত ও অনুরাগী রয়েছেন। তাকে জামিনে মুক্তি দিলে তিনি পালিয়ে যাবেন না। চিকিত্সার আবেদন করে তিনি বলেন, সাঈদী সাহেব হার্টের রোগী। তার বুকে দুটি রিং বসানো হয়েছে। এছাড়াও তার শরীরে বিভিন্ন জটিল রোগ রয়েছে। যে কোনো একটি কার্ডিয়াক হাসপাতালে তাকে উন্নত চিকিত্সা দেয়া প্রয়োজন। চিকিত্সার জন্য একটি লিখিত আবেদন পেশ করার পরামর্শ দিয়ে আদালত বলেন, আপনি একটি আবেদন করেন। আদালত এটি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবেন। আদালতে শুনানিকালে মাওলানা সাঈদীর পক্ষে অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম ছাড়াও অ্যাডভোকেট মশিউল আলম, ফরিদউদ্দিন খান, কামালউদ্দিন আহমেদসহ বিপুল সংখ্যক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। এ সময় মাওলানা সাঈদীর আত্মীয়-স্বজন ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা শাহজাহান চৌধুরী, জসিমউদ্দিন সরকার উপস্থিত ছিলেন।

ভেটো ক্ষমতা অন্য দেশগুলোর জন্য অবমাননাকর : আহমাদিনেজাদ



ইরানের প্রেসিডেন্ট ডক্টর মাহমুদ আহমাদিনেজাদ বলেছেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে কোনো কোনো দেশের ভেটো ক্ষমতা অন্য দেশগুলোর জন্য অবমাননাকর। ফলে বিশ্ব পরিচালনা ব্যবস্থায় অবশ্যই সংস্কার আনতে হবে। 
তিনি রোববার জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডো ভেস্টারভ্যালেকে দেয়া সাক্ষাতের সময় এই বক্তব্য রাখেন। ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, বর্তমান ‘বিশ্ব পরিচালনা ব্যবস্থা’ এভাবে চলতে পারে না। জার্মানি ও ইরান আন্তর্জাতিক বিষয়গুলো পরিচালনার নতুন পন্থা নির্ধারণের প্রচেষ্টায় সহযোগিতা করতে সক্ষম বলে আহমাদিনেজাদ মন্তব্য করেন। জার্মানি আন্তর্জাতিক ইস্যুগুলোয় ইরানের সঙ্গে সহযোগিতা করতে চায় বলে ভেস্টারভ্যালে দাবি করেন। 
এর আগে শনিবার অধিকৃত ফিলিস্তিনে ইহুদিবাদী ইসরাইলের অবৈধ বসতি নির্মাণ বন্ধ করা ও বসতি নির্মাণ তত্পরতার বিরুদ্ধে নিন্দাসূচক জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে মার্কিন ভেটোর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত। শুক্রবার ভোটাভুটির সময় যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া ভেটো ক্ষমতাধারী অন্য চারটি দেশ এবং এ পরিষদের ১০ নির্বাচিত সদস্য দেশ ওই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছিল। এদিকে ইরানের স্পিকার ড. আলী লারিজানি বলেছেন, মুসলমানদের ওপর কর্তৃত্ব করার অধিকার যুক্তরাষ্ট্র ও ইহুদিবাদী ইসরাইলের নেই। তেহরানে ২৪তম আন্তর্জাতিক ইসলামী ঐক্য সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত তিনদিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তৃতায় ড. আলী লারিজানি এসব কথা বলেছেন। তিনি উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের গণজাগরণের কথা উল্লেখ করে বলেন, এ অঞ্চলে যে হত্যাকাণ্ড হচ্ছে তার জন্য মূলত যুক্তরাষ্ট্র দায়ী। তবে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে এ গণজাগরণ দমন করা যাবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন। ইরানের স্পিকার বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে আজ যে জাগরণ দেখা দিয়েছে তা অবশ্যই মুসলমানদের ইসলামী চেতনার ফসল। এ কারণে মার্কিন সরকার ও তার ইহুদিবাদী দোসর এবং সহযোগী একনায়করা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। তিনি এ অঞ্চলের স্বৈরশাসকদের উদ্দেশে বলেন, মার্কিন স্বার্থরক্ষার জন্য নিজ দেশের জনগণ হত্যা করলে তাতে শুধু নিজেদেরই বোঝা বাড়বে।
এসব শাসকের নিজ দেশের জনগণকে সম্মান দেখানো ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই বলেও মন্তব্য করেন ইরানের স্পিকার। তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে জনগণ যে জেগে উঠেছে এটাই বাস্তব। পশ্চিমা বলদর্পী শক্তিগুলোর অব্যাহত শোষণ-নিপীড়ন ও কর্তৃত্বকামী মনোভাবের কারণে এ ‘রাজনৈতিক ভূমিকম্পের’ সৃষ্টি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। ড. লারিজানি বলেন, মুসলিম বিশ্বের চলমান পরিস্থিতিতে শত্রুরা মুসলমানদের মধ্যে অনৈক্যের বীজ বোনার চেষ্টা করতে পারে। এ অবস্থায় মুসলমানদের মধ্যে যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি ঐক্য দরকার এবং সে ঐক্যের ভিত্তি হতে হবে ইসলাম। তিনি বলেন, শত্রুরা সব সময় ধর্মীয় বিভেদ সৃষ্টি করতে চায় তা নয়, কখনও কখনও আঞ্চলিক বিভাজনেরও চেষ্টা চালায়। এ জন্য সব বিষয়ে এখন অনেক বেশি সচেতন থাকতে হবে।