Monday, February 21, 2011

ভেটো ক্ষমতা অন্য দেশগুলোর জন্য অবমাননাকর : আহমাদিনেজাদ



ইরানের প্রেসিডেন্ট ডক্টর মাহমুদ আহমাদিনেজাদ বলেছেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে কোনো কোনো দেশের ভেটো ক্ষমতা অন্য দেশগুলোর জন্য অবমাননাকর। ফলে বিশ্ব পরিচালনা ব্যবস্থায় অবশ্যই সংস্কার আনতে হবে। 
তিনি রোববার জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডো ভেস্টারভ্যালেকে দেয়া সাক্ষাতের সময় এই বক্তব্য রাখেন। ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, বর্তমান ‘বিশ্ব পরিচালনা ব্যবস্থা’ এভাবে চলতে পারে না। জার্মানি ও ইরান আন্তর্জাতিক বিষয়গুলো পরিচালনার নতুন পন্থা নির্ধারণের প্রচেষ্টায় সহযোগিতা করতে সক্ষম বলে আহমাদিনেজাদ মন্তব্য করেন। জার্মানি আন্তর্জাতিক ইস্যুগুলোয় ইরানের সঙ্গে সহযোগিতা করতে চায় বলে ভেস্টারভ্যালে দাবি করেন। 
এর আগে শনিবার অধিকৃত ফিলিস্তিনে ইহুদিবাদী ইসরাইলের অবৈধ বসতি নির্মাণ বন্ধ করা ও বসতি নির্মাণ তত্পরতার বিরুদ্ধে নিন্দাসূচক জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে মার্কিন ভেটোর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত। শুক্রবার ভোটাভুটির সময় যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া ভেটো ক্ষমতাধারী অন্য চারটি দেশ এবং এ পরিষদের ১০ নির্বাচিত সদস্য দেশ ওই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছিল। এদিকে ইরানের স্পিকার ড. আলী লারিজানি বলেছেন, মুসলমানদের ওপর কর্তৃত্ব করার অধিকার যুক্তরাষ্ট্র ও ইহুদিবাদী ইসরাইলের নেই। তেহরানে ২৪তম আন্তর্জাতিক ইসলামী ঐক্য সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত তিনদিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তৃতায় ড. আলী লারিজানি এসব কথা বলেছেন। তিনি উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের গণজাগরণের কথা উল্লেখ করে বলেন, এ অঞ্চলে যে হত্যাকাণ্ড হচ্ছে তার জন্য মূলত যুক্তরাষ্ট্র দায়ী। তবে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে এ গণজাগরণ দমন করা যাবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন। ইরানের স্পিকার বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে আজ যে জাগরণ দেখা দিয়েছে তা অবশ্যই মুসলমানদের ইসলামী চেতনার ফসল। এ কারণে মার্কিন সরকার ও তার ইহুদিবাদী দোসর এবং সহযোগী একনায়করা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। তিনি এ অঞ্চলের স্বৈরশাসকদের উদ্দেশে বলেন, মার্কিন স্বার্থরক্ষার জন্য নিজ দেশের জনগণ হত্যা করলে তাতে শুধু নিজেদেরই বোঝা বাড়বে।
এসব শাসকের নিজ দেশের জনগণকে সম্মান দেখানো ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই বলেও মন্তব্য করেন ইরানের স্পিকার। তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে জনগণ যে জেগে উঠেছে এটাই বাস্তব। পশ্চিমা বলদর্পী শক্তিগুলোর অব্যাহত শোষণ-নিপীড়ন ও কর্তৃত্বকামী মনোভাবের কারণে এ ‘রাজনৈতিক ভূমিকম্পের’ সৃষ্টি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। ড. লারিজানি বলেন, মুসলিম বিশ্বের চলমান পরিস্থিতিতে শত্রুরা মুসলমানদের মধ্যে অনৈক্যের বীজ বোনার চেষ্টা করতে পারে। এ অবস্থায় মুসলমানদের মধ্যে যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি ঐক্য দরকার এবং সে ঐক্যের ভিত্তি হতে হবে ইসলাম। তিনি বলেন, শত্রুরা সব সময় ধর্মীয় বিভেদ সৃষ্টি করতে চায় তা নয়, কখনও কখনও আঞ্চলিক বিভাজনেরও চেষ্টা চালায়। এ জন্য সব বিষয়ে এখন অনেক বেশি সচেতন থাকতে হবে।