Friday, February 25, 2011

ত্রিপোলি রক্ষায় মরিয়া গাদ্দাফি


লিবীয় নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি দেশটির পূর্বাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকায় তার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যখন রাজধানী ত্রিপোলি রক্ষায় মরণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন তখন তিনি আন্দোলন বিক্ষোভের সব দায় ওসামা বিন লাদেন ও তার আল-কায়েদার উপর চাপিয়ে দিয়েছেন। গাদ্দাফি বলেছেন, আল-কায়েদা দেশের তরুণদের বিভ্রান্ত করে বিপথে চালিত করছে। গতকাল বৃহস্পতিবার অজ্ঞাত স্থান থেকে টেলিফোনের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় টিভিতে বিবৃতি দিয়ে গাদ্দাফি এই দাবি করেন।

গদি রক্ষায় মরিয়া চেষ্টা করলেও গাদ্দাফি দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। বিক্ষোভকারীরা তবরুক ও বেনগাজীসহ পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন নগরী নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর সেখানকার প্রশাসন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। ফলে ব্যাপক লুটপাটের ঘটনা ঘটছে। এমনকি লিবীয় সৈন্যদের একটি বড় অংশ গণঅভু্যত্থানের প্রতি বিক্ষোভকারীদের সমর্থন দিচ্ছে। এর আগে মঙ্গলবার গাদ্দাফি ঘোষণা দিয়েছিলেন, ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে তিনি মৃতু্য পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবেন। তবে লড়াই চালানোর মতো লোক তিনি আর পাচ্ছেন না বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। গাদ্দাফি সরকারের মন্ত্রী এবং সরকারি কর্মকর্তারাও এখন নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রেখে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করছে। তাদের একটি বড় অংশ বিক্ষোভকারীদের দলে যোগও দিয়েছে। গতকালও রাজধানী ত্রিপোলিতে গাদ্দাফির অনুগত বাহিনী, পুলিশ এবং সেনারা বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালায়। অপরদিকে, বিদেশীদের দলে দলে লিবিয়া ছাড়ার ঘটনা অব্যাহত আছে।

আল-কায়েদার অঙ্গীকার ঃ এদিকে, আল-কায়েদার উত্তর আফ্রিকা শাখা লিবিয়ায় মোয়াম্মের গাদ্দাফির বিরুদ্ধে গণআন্দোলনে সাধ্যমতো সহায়তা দেয়ার অঙ্গীকার করেছে। আল-কায়েদা ইন দ্য ইসলামিক মাগরেব (একিউআইএম) এক বিবৃতিতে জানায়, 'আমরা আপনাদের সহায়তায় সর্বশক্তিমান আলস্নাহর রহমতে সাধ্যমতো সবকিছু করবো। কারণ আপনারা প্রত্যেক মুসলমানের অধিকার আদায়ের জন্য লড়ছেন যারা আলস্নাহ ও তার রাসুলকে ভালবাসেন।' ওয়েবসাইটে পাঠানো এক বার্তায় একিউআইএম মিসর ও তিউনিসিয়ায় সরকার বিরোধী সফল গণঅভু্যত্থানের প্রশংসা করে বলেছে, ঠক, পাপী ও ঘৃণ্য গাদ্দাফিরও একই পরিণতির সময় এসেছে। আল-কায়দা আরো বলে, 'আমরা লিবিয়ায় বিপস্নবের প্রতি আমাদের সমর্থন জানাচ্ছি এবং আমরা তাদের আশ্বস্ত করছি যে, আমরা তাদের পাশে রয়েছি।'

গাদ্দাফির দাবি ঃ এদিকে, গাদ্দাফি এই এই আন্দোলনের দায় চাপিয়ে দিয়েছে আল-কায়দার উপর। তিনি বলেছেন, আমার দেশের শান্তিপূর্ণ নাগরিকরা এমন সহিংস আচরণ করতে পারে না। তিনি হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, যারা এই বিশৃঙ্খলায় জড়িত তাদের সবাইকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে কঠোর শাস্তি দেয়া হবে। গাদ্দাফি তার বক্তব্যে বলেন, সদ্য বিশ বছরে পা দেয়া তরুণদের এভাবে রাস্তায় নামানোর ক্ষমতা আছে একমাত্র আল-কায়েদার। শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত তিনি তাদের বিরুদ্ধে লড়বেন বলে গতকালও ঘোষণা দেন।
ইত্তেফাক ডেস্ক